হবিগঞ্জ জেলার নবীগঞ্জে ১২ বছর বয়সের এক শিশুকে গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানবিক নির্যাতন করে স্থানীয় এক ব্যাবসায়ী। এদিকে তার ভিডিও চিত্র ধারণ করে ইন্টারনেটে প্রকাশ করে দেয় এক যুবক। রোববার বিকেলে ভিডিও চিত্রটি প্রকাশের পর এলাকায় তোলপাড় শুরু হয়েছে। নির্যাতিত শিশুটি নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের বনকাদিপুর গ্রামের ইসন উল্লার পুত্র পত্রিকা বিক্রেতো দবির হোসেন (১২)। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার কামারগাঁও বাজার, সাইনবোড, জিয়াপুর ও নতুন বাজার এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা বিক্রি করছে আসছে সে। প্রতিদিনের ন্যায় গত শুক্রবার সকাল ১০টার সময় দবির হোসেন স্থানীয় বাজারের হাবিব রেষ্টুরেন্টের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ চৌধুরী তার কাছ থেকে একটি জাতীয় পত্রিকা নেন। পরে দবির হোসেন ওই ব্যাবসায়ীর কাছে পত্রিকার দাম চাওয়ায় সে দেবে না বলে জানায়। এক পর্যায়ে দবির হোসেন ওই রেস্টুরেন্ট থেকে এক প্যাকেট বিস্কুট নিয়ে চলে যেতে চাইলে রেস্টুরেন্ট মালিক দরিবকে পত্রিকার টাকা নিতে বলে ডাকেন। এ সময় দবির আনার রেস্টুরেন্টে আসলে রেস্টুরেন্টের মালিক মোহাম্মদ চৌধুরী ও রেস্টুরেন্টে থাকা মিছবাহ ও তার সহযোগিরা দবিরকে ধরে দোকানের পেছনে নিয়ে বেধরক মারপিট করে। তার আর্তচিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে আসলে তারা দবিরকে কাছের একটি নির্জন জঙ্গঁলে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে অমানুষিক নির্যাতন ও মারপিট করে। এ সময় তারা তার সাথে তাকা পত্রিকা বিক্রির টাকা ও একটি মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে যায় এবং এই মারপিটের দৃশ্যের ভিডিও মোবাইল ফোনে ধারন করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয় রেজাউল নামের স্থানীয় এক যুবক। ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ছালেক মিয়া ও ইউপি সদস্য ফজলুল হক ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দবিরকে না পেয়ে স্থানীয়দের নিয়ে অনেক খোঁজাখোঁজি করেন। একপর্যায়ে শুক্রবার রাত প্রায় ২টার দিকে একটি জমিতে অজ্ঞান অবস্থায় দবিরকে পান। তারা তাকে উদ্বার করে নবীগঞ্জ হাসপাতালে ভর্তি করেন। এ ব্যাপারে নবীগঞ্জ পত্রিকা এজেন্সি বিশ্ব সংবাদ বিতান-এর স্বত্বাধিকারী মুশাহিদ আলী বলেন, অন্যায়ভাবে আমার পত্রিকা বিক্রেতার উপর নির্যাতন করা হয়েছে। আমি এর তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইননানুগ ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকের কাছে দাবি জানান। আমি এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। স্থানীয় ইউপি সদস্য ফজলুল হক চৌধুরী জানান- ‘ঘটনাটি সর্ম্পকে আমি অবগত আছি। ঘটনাটি নিয়ে স্থানীয়ভাবে সমাধানের চেষ্টা করছি।’ এ ব্যাপারে দীঘলবাক ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ছালিক মিয়া বলেন- এটি একটি দুঃখজনক ঘটনা। আমি অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যাবস্থা করব। নবীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল বাতেন বলেন- ঘটনাটি শুনেছি। তবে এখন পর্যন্ত আমাদের কাছে এ ব্যাপারে কোন লিখিত অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে ব্যাবস্থা নেয়া হবে।