গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্ট হত্যাকাণ্ডের একমাস আজ। পুলিশ মহাপরিদর্শক বলছেন, একমাসে গুলশান হত্যাকাণ্ডের তদন্তে অগ্রগতি হয়েছে অনেকটাই। তবে তরুণ প্রজন্মের উগ্রবাদের সঙ্গে জড়িয়ে যাওয়াটা সমাজের জন্য উদ্বেগজনক। এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় পুলিশি কার্যক্রমের পাশাপাশি জনসচেতনতা প্রত্যাশা করছেন তিনি।
আর বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যানের মতে তরুণ প্রজন্মের উগ্রবাদী ঝোঁক বন্ধে পরিবারের পাশাপাশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সচেতনতা বাড়াতে হবে।
পহেলা জুলাই রাতের প্রথম প্রহর। গুলশানের ৭৯ নম্বর সড়কের হলি আর্টিজান রেস্তোরায় দেশি-বিদেশি নাগরিকদের জিম্মি করেছে সন্ত্রাসীরা। এমন খবরে কেঁপে উঠে গোটা দেশ। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পুলিশ, র্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অসংখ্য সদস্য। রাতভর নানা উদ্বেগ উৎকণ্ঠার পর ভোরে ১৩ মিনিটের অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্টের’ মাধ্যমে শেষ হয় জিম্মি সংকট। দেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো নিরীহ মানুষকে জিম্মি করে হত্যার ঘটনায় অনেকটাই বদলে গেছে শহুরে নাগরিক জীবন।
উচ্চবিত্ত পরিবারের সন্তান এবং বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়াদের উগ্রবাদে জড়িয়ে পড়ার তথ্য নাড়িয়ে দেয় গোটা সমাজকে। আর এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সমাজের সর্বস্তরের সহযোগিতার কথা বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক বলেন, ‘একজনকে হত্যা করলে সে বেহেস্তে চলে যাবে এই মানবিকতাটা হলো এখন উদ্বেগের বিষয়। যেন কাউকে ভুল বুঝিয়ে তরুণ কিশোর কিশোরীকে যেন বিপথে না নিয়ে যেতে পারে সেই জন্য আমরা দেশের জনগণকে ও বিভিন্ন কমিটিকে কাজে লাগাতে চাচ্ছি। যেন তারা এ বিষয়ে সচেতন হয়।’
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম এ মান্নান বলেন, ‘আমরা সর্বস্তরের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সচেতন হতে বলেছি। যেন তারা তাদের ছাত্র-ছাত্রীদের বুঝায়। তারা যেন মানুষের মতো মানুষ হতে পারে।’
অভিভাবকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘সন্তানেরা যেন কোনো খারাপ পথে না যেতে পারে সেই ব্যাপারে সবসময় খেয়াল রাখতে পারে। তারা কি করে, কোথায় যায় সেই সব বিষয়ে তাদের খেয়াল রাখতে হবে।’
গুলশান ঘটনার পর নতুন করে সাজানো হয়েছে পুরো রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা। মোড়ে মোড়ে বসেছে পুলিশের চেকপোস্ট, বেড়েছে টহল।
ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার আসাদুজ্জামান মিয়া বলেন, ‘সাম্প্রতিক দুই ঘটনার পর পুরো রাজধানীর নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। অফিস ও আবাসিক এলাকায় নিরাপত্তায় জোরদার করা হয়েছে। আর সবচেয়ে বেশি ব্যাংক ও স্বর্ণের দোকানে নিরাপত্তার ব্যবস্থা অনেক বৃদ্ধি করা হয়েছে।’
গুলশান হামলার কথা মাথায় রেখে নগরবাসীর নিরাপত্তার জন্য সব রকম ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে বলেও দাবি ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের।
এক মাসে আগে এই গুলশানে ছিল জীবনের কোলাহল ও মানুষের আনাগোনা। কিন্তু পহেলা জুলাই নৃশংস হামলা শুধু গুলশান নয় পুরো দেশকে বদলিয়ে দিয়েছে পুরো দেশের নিরাপত্তার ছক। তবে সবারই প্রত্যাশা উগ্রবাদের চোখ রাঙ্গানী নয় অসাম্প্রদায়িক চেতনার বাংলাদেশের জয় হবে শুভ বুদ্ধির।