শেখ সাদি, স্বদেশ নিউজ ২৪.কমঃ পাহাড়ে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী সম্প্রদায়ের প্রাণের উৎসব বৈসাবি। ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বৈসু, মারমা সম্প্রদায়ের সাংগ্রাই ও চাকমাদের বিঝু। এ তিন সম্প্রদায়ের উৎসবের নামের আদ্যক্ষর নিয়েই বৈসাবি উৎসব। উৎসবটি পাহাড়ের নৃ-গোষ্ঠীদের ঐতিহ্যবাহী প্রধান সমাজিক উৎসব।চাকমা সম্প্রদায়ের নদীতে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়েই পাহাড়ে আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হলো এই উৎসবের। এ উৎসবকে তারা ফুল বিঝু বলে থাকেন। উৎসবকে ঘিরে মুখরিত পার্বত্য জনপদ।
উৎসবের সূচনা উপলক্ষে খাগড়াছড়িতে কিরণের আলো ছড়ানোর আগেই ঐতিহ্যবাহী পোশাকে ও সাজে দল বেঁধে হাতে বাহারি রঙের ফুল নিয়ে চেঙ্গী নদীর পারে ভিড় জমান বিভিন্ন বয়সীর নর-নারী। বাদ যায় না ছোট ছোট শিশুরাও।
ভোরের সূর্য উদয়ের সঙ্গে সঙ্গে সে ফুল গঙ্গা দেবীর প্রার্থনা করে ভাসিয়ে দেয়া হয়। এই ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে তারা পুরাতন বছরের জরাজীর্ণ গ্লানি, দুঃখ, কষ্টকে ভাসিয়ে দেয় এবং একইসঙ্গে ফুলের পবিত্রতায় বরণ করে নেয় নতুন বছরকে। নতুন বছরের শুভ কামনায় নিজেদের পবিত্রতা কামনা করে থাকেন। ফুল ভাসানোর পর নদীতে স্নান শেষে ঘর সাজানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েন তারা।
সময় নদীর পারের পরিবেশ হয়ে উঠে উৎসবমুখর। শুরু হয় পাহাড়ের নৃ-গোষ্ঠীদের তিন দিনের বৈসাবি উৎসব।বর্ষবরণ উৎসবকে চাকমারা বিজু, মারমারা সাংগ্রাই এবং ত্রিপুরা জনগোষ্ঠী বৈসুক বলে আখ্যা দিলেও গোটা পার্বত্য এলাকায় তা বৈসাবি নামেই পরিচিত।বাংলা বছরের শেষ দুদিন এবং নতুন বছরের প্রথম দিন এই তিনদিন মিলেই মূলত পাহাড়ে বর্ষবরণ উৎসব পালন করে নৃগোষ্ঠীর লোকজন।চাকমা সম্প্রদায় আগামীকাল শুক্রবার ১৩ এপ্রিল মূল বিজু আর পহেলা বৈশাখ বা গজ্জাপয্যা পালন করে। ওইদিন ঘরে ঘরে চলে অতিথি আপ্যায়ন। সেইসঙ্গে সব বয়সী মানুষ নদী, খাল অথবা ঝরনায় গঙ্গা দেবীর পূজা আরাধনা করেন।
তিনদিনের এই অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে জলে ফুল ভাসানোর মধ্য দিয়ে এবং আগামী ১৪ এপ্রিল মারমা সম্প্রদায়ের জলকেলি বা পানি খেলা দিয়ে উৎসবের শুরু হয়।