বরিশালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। গতকাল শনিবার সন্ধ্যা থেকে আজ রোববার সকাল পর্যন্ত বরিশালের শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন করে আরও ১৩ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। এ নিয়ে গত দুই সপ্তাহে এই হাসপাতালে মোট ৪২ জন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হলো।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হওয়া ৪২ জনের মধ্যে ১৭ জন সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বাকি ২৫ জন এখনো হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এর মধ্যে ২০ জন পুরুষ ও ৫ জন নারী। আজ রোববার হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, পর্যাপ্ত শয্যার অভাবে মেডিসিন ওয়ার্ডগুলোতে ভর্তি সাধারণ রোগীদের সঙ্গেই চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে ডেঙ্গু রোগীদের। ডেঙ্গু রোগীদের জন্য মশারিসহ প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিশ্চিত করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। চিকিৎসাধীন কয়েকজন ডেঙ্গু রোগী ও তাঁদের স্বজনেরা জানান, জায়গার অভাব থাকলেও তাঁদের দিকে আলাদা নজর রাখছেন হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা।
শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানিয়েছে, জুন মাসে এই হাসপাতালে মাত্র একজন ডেঙ্গু রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। কিন্তু জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়তে থাকে। ১৬ জুলাই থেকে আজ সকাল পর্যন্ত মোট ৪২ জন রোগী ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন। শনিবার বিকেল পর্যন্তও ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন ১২ জন। কিন্তু সন্ধ্যার পর থেকে রোববার সকাল পর্যন্ত নতুন করে আরও ১৩ জন ডেঙ্গু নিয়ে ভর্তি হয়েছেন।
চিকিৎসকেরা জানালেন, বরিশাল-ঢাকা নৌপথে প্রতিদিন ১০টি বড় লঞ্চ যাতায়াত করে। এগুলোর মাধ্যমে ঢাকা থেকে ডেঙ্গুর জীবাণুবাহী মশা আসতে পারে। এ কারণে লঞ্চগুলোর কেবিনে যাত্রী ওঠার আগে মশার ওষুধ স্প্রে করার ওপর জোর দিয়েছেন তাঁরা। সামনেই কোরবানির ঈদ, এই ঈদ সামনে রেখে কয়েক লাখ মানুষ বরিশালে আসবে। এ সময়টা তাই আরও ঝুঁকিপূর্ণ। সে জন্য আগেভাগেই লঞ্চ-বাস কর্তৃপক্ষকে উদ্যোগ নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
জানতে চাইলে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক মো. বাকির হোসেন বলেন, ‘বরিশালে আগে ডেঙ্গুর উপস্থিতি না থাকলেও ঢাকা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীরা বরিশালে ফিরে আসায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। আমরা আগে থেকেই পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি এবং ডেঙ্গু নির্ণয়ের জন্য সব ধরনের পরীক্ষা-নিরীক্ষার ব্যবস্থা করে রেখেছি। বিনা মূল্যে রক্ত সরবরাহের ব্যবস্থাও আমরা করে রেখেছি।’
হাসপাতাল থেকে প্রয়োজনীয় সব ওষুধ সরবরাহ করা হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মো. বাকির হোসেন। ডেঙ্গু প্রতিরোধে বাড়ির আশপাশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ রোগের প্রাথমিক লক্ষণ দেখামাত্রই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়ার জন্য সবাইকে পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।