এ বাজারটি কুমিল্লা নগরী লাগোয়া সদর উপজেলার ডুমুরিয়া চাঁদপুরের। ১৯৯০ সালের দিকে বাজারটি শুরু হয়।
বাজারের প্রথম নারী ব্যবসায়ী আনোয়ারা বেগম। চান্দিনার গল্লারচর থেকে এসে তার স্বামী আইয়ুব আলী শহরে রিকশা চালাতেন। তিন ছেলে তিন মেয়ে নিয়ে সংসারে টানাটানি লেগেই থাকতো। ভাড়া থাকতেন সদর উপজেলার ডুমুরিয়া চাঁদপুরে। এখানে তখন দোকান-পাট কিছুই ছিল না। বেল গাছের তলায় বসে প্রথম প্রথম প্রতিদিন দুই আটি করে আখ বিক্রি করতেন। এরপর শুরু করেন শাক-সবজি বিক্রি। এরও পরে একটি ঘর ভাড়া নিয়ে নিয়মিত ব্যবসা শুরু করেন। নারী হয়ে ব্যবসা করায় প্রথমে তাকে বিভিন্নজন নানা কথা বলেছে। কিন্তু দমেননি তিনি। তার সফলতা দেখে উৎসাহিত হয়েছেন আরো কয়েকজন নারী। তারাও দোকান খুলে বসা শুরু করেন।
আনোয়ারা ছাড়াও এখানে এখন আরো পাঁচজন নারী ব্যবসায়ী আছেন। বাজারের অধিকাংশ ক্রেতাই নারী। বাজারটি মহল্লার ভিতরে হওয়ায় নারীরা বিনা দ্বিধায় আসতে পারেন।
সবজি দোকান থেকে শুরু করে মাছ দোকান, মুদি, মনোহারী, ওষুধ দোকানও আছে, নির্মিত হয়েছে দোতলা মার্কেটও। প্রতিদিন ভোরে এখানে বাজার জমে। বিশেষ করে গোমতী তীরের রঙিন সবজিতে বাজারটি বর্ণিল হয়ে উঠে। তাজা সবজির জন্য ক্রেতারাও হুমড়ি খেয়ে পড়েন। নিম্ন আয়ের মানুষ এই বাজারে বেশি ভিড় করলেও এখন মধ্যবিত্তরাও আসছেন।
আনোয়ারা বেগম বলেন, এখানে ব্যবসা করে তার সংসারে সচ্ছলতা এসেছে। ছেলে-মেয়েদেরও বিয়ে দিয়েছেন। জমি কিনে বাড়ি করেছেন। এখন স্বামী-স্ত্রী দুইজনে মিলে ব্যবসা করছেন। তিনি ব্যবসা করায় পরিবারে ভালো সম্মান পান।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মীর হোসেন মীরু বলেন, নারীরাই এখানে বেচা-কেনা করে। এজন্য এর নাম বউ বাজার হয়েছে। বাজারটি জমে উঠেছে ছয়-সাত বছর ধরে। নাম পাল্টাতে চাইলেও মানুষ একে বউ বাজারই বলে। এখানে কোনো খাজনা নেয়া হয় না। তবে মসজিদের জন্য কিছু টাকা তোলা হয়।