দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়কর রিটার্ন যথাসময়ে জমা না দেওয়ায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদ লালমনিরহাট-১ আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন।
এছাড়াও একই আসন থেকে নির্বাচন করা জাসদ প্রার্থী সাদেকুল ইসলামের বিরুদ্ধেও মামলা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার রাতে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান গণপ্রতিনিধিত্ব অধ্যাদেশ ১৯৭২ এর অনুচ্ছেদ ৭৪ ধারায় এ মামলা করেন।
মামলার বিষয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা ও লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান বলেন, “লালমনিরহাট-১ আসনে হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের ব্যয় রিটার্ন আমাদের অফিস পায়নি। কেনো তারা সময়মতো তা জমা দেননি তার যৌক্তিক ব্যাখ্যা না পাওয়ায় এ ব্যবস্থা নেওয়া হলো।”
লালমনিরহাট জেলা নিবার্চন কর্মকর্তা মো:ফজলুল করীম জানান, সম্পদের হিসাব চেয়ে তাকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সে চিঠি গ্রহন না করে তা ফেরৎ পাঠায়। চিঠি পাঠানো ছাড়া জেলা নিবার্চন অফিসের আর কিছুই করার ছিল না। তাই তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন রির্টানিং কর্মকর্তা।
সম্পদের হিসাব না পাওয়ার কথা স্বীকার করে লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক ও জাতীয় সংসদ নিবার্চনের রির্টানিং অফিসার মো:হাবিবুর রহমান বলেন, “নিবার্চন কমিশনের সিদ্ধান্ত মোতাবেক এরশাদ সাহেবের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাছাড়া অপরাধ সংগঠিত হওয়ার পর ৬ মাস পর্যন্ত সময় থাকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার। তাই ৬ মাসের মধ্যে এরশাদের কোনো সাড়া না পেয়ে বাধ্য হয়েই আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
লালমনিরহাট সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) এএইচএম মাহফুজার রহমান এরশাদের বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
গত ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হওয়া দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বি প্রার্থীদের ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নির্বাচনী ব্যয়ের বিবরণী রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে জমা দেয়ার কথা ছিল।
এর আগে নির্বাচনী ব্যয় বিবরণী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে না দেওয়ায় তার বিরুদ্ধে মামলা করতে নির্দেশ দেয় নির্বাচন কমিশন। একই কারণে দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়া আরো ১৪ প্রার্থীর বিরুদ্ধেও মামলা করার জন্য সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
গত রোববার বিকেলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সহকারী সচিব মিজানুর রহমান স্বাক্ষরিত একটি চিঠি চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ও সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসার বরাবর পাঠানো হয়। চিঠিতে মামলা করে কমিশনকে অবহিত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
নির্বাচনী আইন অনুযায়ী, গেজেটে প্রকাশের ৩০ দিনের মধ্যে নির্বাচনের ব্যয়ের হিসাব নিজ নিজ রিটার্নিং অফিসারের কাছে জমা দেওয়ার আইনি বিধান রয়েছে এবং এর অনুলিপি ইসি সচিবালয়েও পাঠানোর কথা রয়েছে।