প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি চাই বিমানে যারা কাজ করবেন তারা আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করবেন। যাতে দেশের কোনো বদনাম না হয় এবং দেশের ভাবমূর্তি সমুজ্জ্বল থাকে। গতকাল বিমানের ৭৮৭ বোয়িং ড্রিমলাইনার আকাশবীণা’র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। তিনি বলেন, বিমানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের লক্ষ্য রাখতে হবে যাতে বিদেশি এবং স্থানীয় যাত্রী, প্রবাসী বাংলাদেশিরা দ্রুত ইমিগ্রেশন শেষ করে তাদের মালপত্র নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করতে পারে। হযরত শাহজালাল (রহ.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ভিভিআইপি টার্মিনালে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটনমন্ত্রী একেএম শাজাহান কামাল বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। অন্যান্যের মধ্যে বিমানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এয়ার মার্শাল (অব.) মুহম্মাদ এনামুল বারী, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. মহিবুল হক এবং বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ এম মোসাদ্দিক আহমেদ অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন। মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, তিন বাহিনী প্রধান, বিদেশি কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তার বিষয়ে দু’একটি দেশের আপত্তি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার একটা বিষয় ছিল সেটা আপনারা জানেন। কোনো কোনো সরকার এ ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল তাও আপনারা জানেন।যাই হোক, তারা সেটি প্রত্যাহার করেছে এবং নিরাপত্তার বিষয়টি এখন উন্নত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করলে যে উন্নয়ন করা যায়, সেটাও আমরা কিন্তু প্রমাণ করেছি। দেশে গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকার সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, দেশ আজ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। এই অর্জনটা ধরে রেখেই আমাদের বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। তিনি বলেন, ১৯৭২ সালে বিমানের যাত্রা শুরু হয়েছিল ডাকোটা উড়োজাহাজ দিয়ে আর আজকে যুক্ত হচ্ছে অত্যাধুনিক বোয়িং ৭৮৭ ‘ড্রিমলাইনার আকাশবীণা’র।
‘আকাশবীণা’র আজকের এই অভিষেকের দিন বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জন্য আরো একটি মাইলফলক, স্বপ্ন পূরণের দিন। প্রধানমন্ত্রী অতীতে বিমানের দুরবস্থার কথা স্মরণ করে বলেন, ২০০৯ সালে আমরা সরকার পরিচালনায় এসে দেখি বিমানের অবস্থা খুবই নাজুক। ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় এসে জাতীয় পতাকাবাহী প্রতিষ্ঠান বিমানকে পরিণত করে দুর্নীতি আর লুটপাটের স্বর্গরাজ্যে। তারা নিউ ইয়র্ক, ব্রাসেলস, প্যারিস, ফ্রাঙ্কফুর্ট, মুম্বই, নারিতা এবং ইয়াংগুন রুটে বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়। চরম লোকসান আর অব্যবস্থাপনায় বিমান মুখ থুবড়ে পড়ে। বিমানের উন্নয়নে তার সরকারের নানা উদ্যোগের বর্ণনা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে এই বিমানবন্দরে বোর্ডিং ব্রিজ বলে কিছুই ছিল না। বিমানবন্দরে নেমে হেঁটে বিমানে উঠতে হতো। আমরা সরকারে এসে এটির আধুনিকায়নের দিকে নজর দেই এবং উন্নত করার ব্যবস্থা নেই। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কর্মকর্তারা জানান, উদ্বোধনের পর সন্ধ্যায় ‘ড্রিমলাইনার আকাশবীণা’র প্রথম বাণিজ্যিক ফ্লাইট ঢাকা থেকে মালয়েশিয়ার উদ্দেশে ছেড়ে যায়।