হেগে অবস্থিত আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) রুলিংকে জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে মিয়ানমার। তারা বলেছে, রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে কোনো বিচারিক অধিকার নেই আইসিসির। এ খবর দিয়েছে অনলাইন ভয়েস অব আমেরিকা ও আল জাজিরা। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার আইসিসি রুলিং দেয় যে, মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নৃশংসতাকে মানবতার বিরোধী অপরাধের তদন্ত বা বিচার করার এক্তিয়ার রয়েছে তাদের। এর পরই মিয়ানমারের প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টের অফিস থেকে শুক্রবার এ নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। এতে ওই রুলিংকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করা হয়। বলা হয়, ত্রুটিযুক্ত প্রক্রিয়া ও আইনগত সংশয়ের মধ্য দিয়ে ওই রুলিং দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে দেয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ওই রায়ের প্রতি সম্মান দেখাতে কোনো বাধ্যবাধকতা নেই মিয়ানমারের।
গত বছর ২৫ শে আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নৃশংস নির্যাতন চালায়।এতে কমপক্ষে ৭ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেন। এ বছর আগস্টে জাতিসংঘের নিরপেক্ষ সংস্থা ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশন এ নিয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করে। তাতে বলা হয়, গত বছর গণহত্যা চালিয়েছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তারা রোহিঙ্গা নারীদের ধর্ষণ করেছে। এর উদ্দেশ্য ছিল গণহত্যা। ওই রিপোর্টে আরো বলা হয়, মিয়ানমারের সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইং ও অন্য ৫ জন শীর্ষ জেনারেলের বিচার হওয়া উচিত। তবে মিয়ানমার এমন নৃশংসতার অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
এমন অবস্থায় আইসিসির প্রসিকিউটর ফাতু বেনসুদা অভিযোগের তদন্ত করা যাবে কিনা তা যাচাই করার জন্য আইসিসির সিদ্ধান্ত চেয়ে একটি আবেদন করেন। তারই প্রেক্ষিতে আইসিসি বৃহস্পতিবার ওই রায় দিয়েছে। তিন বিচারকের প্যানেল ওই রায়ে বলেছেন, রোহিঙ্গা জনগণের বিরুদ্ধে যে অপরাধ সংঘটিত করা হয়েছে, তাদেরকে দেশছাড়া করা হয়েছে, তার প্রেক্ষিতে এটাকে মানবতা বিরোধী অপরাধ ধরে বিচার করার অধিকার আছে আইসিসির। এর প্রেক্ষিতে শুক্রবারই এমন রায়কে স্বাগত জানিয়েছে মানবাধিকার বিষয়ক আন্তর্জাতিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।