চিকিৎসার অর্থ পরিশোধ করতে না পারায় ভারতের মধ্যপ্রদেশের একটি হাসপাতালে বয়স্ক এক ব্যক্তিকে বেডের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছে। এমন অভিযোগের পর তোলপাড় চলছে চারদিক। বিষয়টি গড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান পর্যন্ত। তিনি এ বিষয়ে নোট নিয়েছেন। চলছে তদন্ত। এরই মধ্যে হাসপাতালের বেডে রশি দিয়ে দু’পা বেঁধে রাখা ওই বৃদ্ধের ছবি প্রকাশিত হয়েছে মিডিয়ায়। এ খবর দিয়েছে অনলাইন এনডিটিভি। এতে বলা হয়েছে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই ব্যক্তির খিঁচুনি হয়েছিল।
তিনি যাতে নিজের কোনো ক্ষতি করতে না পারেন, তাই হাত ও পা বেঁধে রাখা হয়েছিল। শাজাপুর ভিত্তিক ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে অভিযোগ সত্য প্রমাণিত হলে কঠোর শাস্তিমুলক ব্যবস্থা নেয়ার হুমকি দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। এ বিষয়ে জেলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।
ওই বৃদ্ধের পরিবারের অভিযোগ, তার চিকিৎসায় ১১ হাজার রুপি বিল আসে। এই বিল পরিশোধ করতে পারছিলেন না তারা। এ জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ওই বৃদ্ধের হাত ও পা বেঁধে রাখে। বৃদ্ধের মেয়ে বলেছেন, আমরা ভর্তির সময় ৫ হাজার রুপি জমা দিয়েছিলাম। কিন্তু চিকিৎসা আরো কয়েকদিন চলতে থাকায় বিল দেয়ার মতো অর্থ আমাদের কাছে ছিল না। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ওই বৃদ্ধের ইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্যহীনতার কারণে খিঁচুনি দেখা দিয়েছে। হাসপাতালের একজন ডাক্তার বলেছেন, এ জন্য আমরা তাকে বেঁধে রেখেছি, যাতে তিনি নিজের কোন ক্ষতি করতে না পারেন। এক্ষেত্রে মানবিক দিক বিবেচনা করে হাসপাতাল তাদের বিল মাফ করে দিয়েছে।
কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান টুইটে বলেছেন, শাজাপুরে একটি হাসপাতালে সিনিয়র একজন নাগরিকের সঙ্গে আচরণের বিষয়টি নোটিসে এসেছে। অপরাধীরা ছাড়া পাবে না। তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। টুইট করেছেন সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেসের সিনিয়র নেতা কমল নাথ। তিনি ওই বৃদ্ধের ঘটনাকে অমানবিক ও বর্বর প্রকৃতির বলে আখ্যায়িত করেছেন। বলেছেন, শাজাপুরের একটি হাসপাতালে একজন বয়স্ক মানুষের সঙ্গে অমানবিক ও বর্বর আচরণ করা হয়েছে। হাসপাতালের বিল পরিশোধ করতে না পারার জন্য ওই ব্যক্তির হাত ও পা রশি দিয়ে বেঁধে তাকে জিম্মি করা হয়েছে। এ টুইটের সঙ্গে ওই বৃদ্ধকে হাসপাতালের বেডে বেঁধে রাখার ভিডিও শেয়ার করেছেন তিনি। শাজাপুর জেলা প্রশাসন এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে।