সময়ের সেরা ব্যাটসম্যানদের তালিকায় শুরুর দিকেই থাকবে বিরাট কোহলি ও কেন উইলিয়মসনের নাম। মাঠের চরিত্রে অবশ্য দুইজন দুই মেরুতে। ভারত অধিনায়ক মাঠে থাকেন আক্রণাত্মক মেজাজে। সেটা ব্যাটিংয়ে হোক কিংবা ফিল্ডিংয়ে। উইলিয়ামসন নিপাট ভদ্রলোক। দু’জনেই জাতীয় দলের নেতেৃত্বে রয়েছেন প্রায় ছয়বছর। মাঠের ক্রিকেটে প্রতিদ্বন্দ্বী হলেও বাইরে দুই মহাতারকার সম্পর্কটা বন্ধুত্বপূর্ণ। কমতি নেই একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধা আর বিনয়ের।
ভারতীয় অধিনায়কের সঙ্গে ক্রিকেট মাঠ ও মাঠের বাইরের দীর্ঘপথচলায় সঙ্গী হতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করেন উইলিয়ামসন।
কোহলি-উইলিয়ামসনের প্রথম সাক্ষাৎ ২০০৮ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে। মালয়েশিয়ায় অনুষ্ঠিত সেই আসরে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে ভারতকে শিরোপা জেতান কোহলি। নিউজিল্যান্ড যুব দলের অধিনায়ক ছিলেন উইলিয়ামসন। সেবার ভারতের কাছে হেরে সেমিফাইনাল থেকে ফাইনালে বাদ পড়ে কিউইরা। সময়ের পরিক্রমায় নিজেদের প্রতিষ্ঠিত করেছেন সময়ের সেরা হিসেবে। সম্প্রতি স্টার স্পোর্টসের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রসংশায় ভাসিয়েছেন কোহলিকে। তিনি বলেন, ‘একে অপরের বিপক্ষে খেলতে পারায় নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করি। তরুণ বয়স থেকে আমাদের পথচলা। তার (কোহলি) ক্রিকেটে অগ্রগতি কাছ থেকে দেখা এবং তার এই পথচলা অনুসরণ করাটা অসাধারণ।’
২০০৮ অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়ে ফাইনাল খেলে ভারত। ২২ গজের প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছাপিয়ে বন্ধু বনে গেছেন কোহলি-উইলিয়ামসন। একে-অপরের সঙ্গে ক্রিকেট নিয়ে আলোচনাও করেন বলে জানালেন কিউই অধিনায়ক, ‘একে-অপরের বিপক্ষে লম্বা সময় খেলাটা সত্যি দারুণ। গত কয়েক বছরে আমরা আরো কাছাকাছি এসেছি। মাঠ এবং মাঠের বাইরের বিভিন্ন বিষয়ে নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করেছি। মাঠে আমাদের চরিত্র আলাদা হলেও কিছু বিষয়ে আমাদের মধ্যে মিল খুঁজে পেয়েছি।’
বিরাট কোহলি আইসিসির টেস্ট ও ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে যথাক্রমে রয়েছেন দুই ও এক নম্বরে। আর টি-টোয়েন্টিতে দশম। ৮৬ টেস্টে ৫৩.৬২ গড়ে ৭ হাজার ২৪০ রান করেছেন কোহলি। সেঞ্চুরি ২৭ ও ফিফটি হাঁকিয়েছেন ২২ বার। ২৪৮ ওয়ানডে ম্যাচে ৫৯.৩৩ গড়ে ১২ হাজার ৭২৬ রান করেছেন ৩১ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। শতক হাঁকিয়েছেন ৪৩টি। আর অর্ধশতকের সংখ্যা ৫৮। ৮২ টি-টোয়েন্টিতে ৫০.৮০ গড়ে করেছেন ২ হাজার ৭৯৪ রান। ২৪ ফিফটি করলেও আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে এখনো শতক অধরা ভারত অধিনায়কের।
নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন আইসিসির টেস্ট ও ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে রয়েছেন যথাক্রমে চতুর্থ ও সপ্তম স্থানে। আর টি-টোয়েন্টিতে ষোড়শ। সময়ের অন্যতম সেরা এই ব্যাটসম্যান ৮০ টেস্টে ৫০.৯৯ গড়ে করেছেন ৬ হাজার ৪৭৬ রান। সেঞ্চুরি ২১ ও ফিফটি হাঁকিয়েছেন ৩২ বার। ১৫১ ওয়ানডে ম্যাচে ৪৭.৪৮ গড়ে ৬ হাজার ১৭৩ রান করেছেন ২৯ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান। শতক হাঁকিয়েছেন ১৩টি। আর অর্ধশতকের সংখ্যা ৩৯। ৬০ টি-টোয়েন্টিতে ৩২.৬৪ গড়ে করেছেন ১ হাজার ৬৬৫ রান। কিউই অধিনায়ক আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১১টি ফিফটি করলেও এখনো তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগারের দেখা পাননি।