একজন পাকিস্তানের দুলালী, দেশটির সর্বাধিক পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেত্রী হুমাইমা মালিক। জীবনে প্রথম নায়িকা হিসেবে অভিনয় করেছেন বলিউডের সিনেমায়। অন্যজন ‘রাজা নটবরলাল’ নামের ওই ছবিতে হুমাইমার নায়ক ভারতীয় দুলাল ইমরান হাশমি। শিগগিরই ভারত-পাকিস্তানে যুগপত্ মুক্তি পাচ্ছে এই ছবি। কিন্তু এ ছবির তিনটি চুমুর দৃশ্য নিয়ে চিন্তিত হুমাইমা! ভারতীয় দুলালের সঙ্গে পাকিস্তানি দুলালির ঠোঁটে-ঠোঁট মেলার এ ছবি দুদেশের দর্শকেরা নেবেন কীভাবে!
তবে কি ‘রাজা নটবরলাল’ কাটছাঁট ছাড়াই দেখানো হবে পাকিস্তানের রুপালি পর্দায়? এ প্রশ্নও সামনে চলে এসেছে এ ছবির মুক্তিকে ঘিরে। কেননা বাস্তবতা হলো, কিছুদিন আগ পর্যন্তও পাকিস্তানে প্রায় সব ছবিরই চুমুর দৃশ্য সেন্সর করে দেখানো হতো। এ ছাড়া এ প্রশ্নও করা যায়, ‘রাজা নটবরলাল’ ছবিতে পাকিস্তানি দুলালী হুমাইমা আর ভারতীয় দুলাল ইমরান হাশমির রোমান্স কি দুই দেশের রাজনৈতিক বৈরিতার ঘেরাটোপ ডিঙোতে পারবে?
এ প্রসঙ্গে পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত সাংবাদিক ফিফি হারুন বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসের এক প্রতিবেদনে বলেছেন, পাকিস্তানে এ ধারণা সব সময়ই খুব নেতিবাচকভাবে উপস্থিত। অধিকাংশ মানুষেরই ধারণা, খ্যাতি আর প্রতিষ্ঠার সন্ধানে ‘আমাদের মেয়েরা’ সীমানা পেরিয়ে চলে যাচ্ছে। সেখানে মানুষের মধ্যে এ ধারণাও প্রবল যে, শত্রুকে চুমু খাওয়া কিংবা ভারতীয় পুরুষদের ম্যাগাজিনে হাজির হওয়া কখনোই গ্রহণযোগ্য নয়।
‘রাজা নটবরলাল’-এ হুমাইমা মালিকের চুমুর দৃশ্য পাকিস্তানে সেন্সর ছাড়পত্র পাবে না বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে বিবিসির ওই প্রতিবেদনে। কারণ হিসেবে ফিফি হারুন লিখেছেন, ‘ভারতীয়দের সঙ্গে নিবিড় ঘনিষ্ঠতার সম্পর্ককে পাকিস্তান সেন্সর কর্তৃপক্ষ সব সময়ই দেশপ্রেমের অবমাননা হিসেবে দেখে থাকে। বলিউড বড় আর আলো ঝলমলে হতে পারে, কিন্তু ললিউড (লাহোরের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি) এবং পাকিস্তানি সেনাবাহিনী সব সময়ই আমাদের মেয়েদের পাকিস্তানি সিনেমায় ফিরিয়ে আনতে বদ্ধপরিকর।’
বলিউডের এ সিনেমায় চুমুর দৃশ্যে অভিনয় করে হুমাইমা মালিক সেই অভিনেত্রীদের তালিকায় নাম লেখালেন, যাঁরা সীমানা ডিঙিয়ে ভারতে গেছেন। আর অনেক পাকিস্তানির কাছেই এটা অবমাননাকর। কিছুদিন আগে আরেক পাকিস্তানি তারকা ভিনা মালিক ভারতে পুরুষদের একটা ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ হয়ে ভয়ানক তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন। প্রচ্ছদের ছবিতে ভিনা মালিককে সম্পূর্ণ নগ্নভাবে দাঁড়িয়ে পোজ দিতে দেখা গিয়েছিল। শুধু বাহুতে বড় বড় হরফে লেখা ছিল ‘আইএসআই’ (পাকিস্তানি গোয়েন্দা সংস্থার নাম)। ভিনা মালিককে এরপর বেশির ভাগ সময় লন্ডনেই থাকতে দেখা গেছে। বিবিসির উর্দু সার্ভিসে সাক্ষাত্কার দিতে আসার সময় তিনি এমনকি বোরকা পরেই এসেছিলেন।