কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ) থেকে সুবল চন্দ্র দাস ঃ কিশোরগঞ্জে আমন ধানের বাম্পার ফলনের পরও লাগাতার অবরোধ ও হরতালের কারণে কৃষকের মুখে হাসি নেই। কারণ, ধান বিক্রি করতে পারছেন না তারা। আবার ডিজেলের দাম বেড়েছে। টানা অবরোধে গত ১৫ দিনে বাজারে ধানের দাম প্রতি মণে গড়ে ১৩০-১৫০ টাকা কমে গেছে। তাই কৃষক ও বর্গাচাষিরা বাম্পার ফলন নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। অবরোধের কারণে ধান ব্যবসায়ী ও পাইকাররা বাজার ও মোকামে আসা প্রায় বন্ধ করে দিয়েছেন। পাশাপাশি সব ধরনের যানবাহন বন্ধ থাকায় কৃষকের গোলার ধান পড়ে রয়েছে। বাজার ও ধানের মোকামগুলোতে ধান নিয়ে বসে থাকলেও ¯’ানীয় কিছু আড়তদার কম দামে সামান্য ধান কিনলেও সিংহভাগ ধান অবিক্রীত থেকে যা”েছ। অন্যদিকে গোটা হাওরসহ সারা জেলায় বোরো আবাদের মৌসুম শুর“ হয়েছে। এ সময় কৃষক আমন ধান বিক্রি করে সেচের স্কিম পরিচালনাসহ ডিজেলচালিত পানির পাম্প দিয়ে ক্ষেতে পানি দেন। অবরোধের কারণে দ্বিমুখী সংকটে পড়েছেন কৃষককুল। অবরোধে ডিজেলের দাম বেড়েছে। আবার অবরোধের কারণে সঠিক দামে কৃষক আমন বিক্রি করতে পারছেন না। কৃষক ও ধান ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছর এ সময় বাজারে ধান বিক্রিতে চাঙ্গা ভাব থাকে। কৃষকরা জানান, কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হওয়ায় প্রায় শতভাগ ধান এখন কৃষকের গোলায়। ধানের দামও ১৫ দিন আগে ভালো ছিল। প্রতি মণ গড়ে ৮৫০ টাকা। অথচ ১৫ দিন ধরে বাজার ও মোকামগুলোতে ক্রেতা না থাকায় প্রতি মণ ধানের দাম ৬৯০-৭০০ টাকায় নেমে এসেছে। কিশোরগঞ্জের বড় বাজার, নীলগঞ্জ বাজার, করিমগঞ্জ বাজার, নিয়ামতপুর, চামড়াঘাট, মরিচখালি, গোবিন্দপুর, কটিয়াদী, রামপুর বাজার ও মোকামগুলোতে সরেজমিন দেখা গেছে, কৃষকরা বস্তায় করে ধান নিয়ে বাজারে আসছেন। বাজারে বিক্রেতার চেয়ে ক্রেতা কম। কৃৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক কৃষিবিদ অমিতাভ দাস বাম্পার ফলনের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ বছর সারা জেলায় উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে কৃষক এবার পুরো ফলনই ঘরে তুলতে পারছেন। হরতাল-অবরোধের কারণে বিক্রিতে সমস্যা হয়েছে।