গণধর্ষিতা এক গৃহবধূকে অভিযুক্ত এক ধর্ষকের সঙ্গে থানায় কাজী ডেকে বিয়ে দেওয়ার ঘটনায় পাবনা সদর থানার প্রত্যাহার হওয়া ওসি ওবাইদুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পুলিশ সদর দপ্তর। বুধবার বিকেলে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইবনে মিজান। তিনি জানান, এই সিদ্ধান্ত জানিয়ে পুলিশ মহাপরিদর্শক জাবেদ পাটোয়ারীর পক্ষে সহকারী মহাপরিদর্শক (পারসোনাল ম্যানেজমেন্ট) আব্দুল্লাহিল বাকি স্বাক্ষরিত এক ফ্যাক্স বার্তা সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বার্তায় ওবাইদুল হককে চট্টগ্রাম রেঞ্জে সংযুক্তির কথাও জানানো হয়েছে।
পাবনার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ইবনে মিজান বলেন, পাবনা সদর উপজেলার দাপুনিয়া ইউনিয়নের যশোদল সাহাপুর গ্রামে গণধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূর মামলা না নিয়ে ওসি ওবাইদুল হক এক ধর্ষকের সঙ্গে থানায় কাজী ডেকে তার বিয়ে দেন। এ ঘটনা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হলে পুলিশি তদন্তে ওসি ওবাইদুল হক এবং এসআই একরামুল হকের সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলে। প্রাথমিকভাবে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলাম গত ১২ সেপ্টেম্বর ওসি ওবাইদুল হককে পাবনা পুলিশ
লাইনে প্রত্যাহার ও এসআই একরামুল হককে সাময়িক বরখাস্ত করেন। তদন্ত রিপোর্ট পুলিশ সদর দপ্তরে পাঠানোর পর প্রতিবেদনটি পর্যালোচনা শেষে মঙ্গলবার রাতে ওসি ওবাইদুল হককে সাময়িক বরখাস্তের সিদ্ধান্ত জানিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এদিকে এ ঘটনায় মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের নির্দেশে গঠিত জেলা প্রশাসকের তদন্ত দলের প্রতিবেদনেও ধারাবাহিক গণধর্ষণ, ঘটনা ধামাচাপা দিতে মামলা না নিয়ে পাবনা সদর থানার ওসির নির্দেশে এক ধর্ষকের সঙ্গে বিয়ের খবরের সত্যতা মিলেছে। পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ ওই তদন্ত প্রতিবেদনটিও মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের কাছে পাঠিয়েছেন।
প্রসঙ্গত, গত ২৯ আগস্ট রাতে যশোদল সাহাপুর গ্রামের তিন সন্তানের জননী এক গৃহবধূকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে দাপুনিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ঘন্টু, রাসেল, ওসমান, হোসেন ও সঞ্জু নামের পাঁচ যুবক টানা ৪ দিন ধরে আটকে রেখে ধর্ষণ করে। গত ৫ সেপ্টেম্বর ওই গৃহবধূ বাদী হয়ে পাবনা সদর থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে ওসি মামলাটি নথিভুক্ত না করে থানায় কাজী ডেকে অভিযুক্ত এক ধর্ষক রাসেলের সঙ্গে ওই গৃহবধূর বিয়ে দেন। পরে পাবনার পুলিশ সুপার শেখ রফিকুল ইসলামের নির্দেশে গত ৯ সেপ্টেম্বর মামলা গ্রহণের পর ৫ আসামিকেই গ্রেফতার করা হয়।