জাজিরায় স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে খুঁজছে পুলিশ:
॥ জাজিরা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক এক গৃহবধূর আপত্তিকর ভিডিও ফেইসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার অভিযোগে জাজিরা থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে হন্য হয়ে খুজছে।
স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা পলাতক রয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে গৃহবধূর বাবা ছাড়া উভয় পরিবারের কাউকেই খুজে পাওয়া যায়নি। গৃহবধূর বাবা এ বিষয়ে কোন কিছুই জানেন না বলে জানান। এ ঘটনায় গৃহবধূর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোন অভিযোগ করেনি। স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতাকে সাময়িক ভাবে দল থেকে বহিঃস্কার করা হয়েছে।
জাজিরা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক কে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জাজিরা থানা ও সরেজমিন ঘুরে জানাগেছে, ২০১৬ সালে জাজিরা উপজেলার জয়নগর খোড়াতলা গ্রামের আঃ মান্নান মাদবরের ছেলে আশরাফুল ইসলাম মাদবর ওরফে মিঠুন এর সঙ্গে একই উপজেলার এক কলেজ পড়–য়া ছাত্রির সঙ্গে পরিচয় হয়। এরই সূত্রধরে দুজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। একপর্যায়ে ঐ ছাত্রির সঙ্গে মিঠুনের শারিরীক মেলামেশা হয়।
এ সব কিছু আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি ধারন করে মিঠুন। পরবর্তীতে ঐ সকল ভিডিও ও ছবি পুজি করে মিঠুন কলেজ ছাত্রিকে ফাঁদে ফেলে একাধিকবার ধর্ষন করে। এরই মধ্যে পারিবারের মতামতে গত ২৫ নভেম্বর ঐ ছাত্রির পার্শ্ববতী শিবচর উপজেলার এক ছেলের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। মিঠুন কলেজ ছাত্রিকে বিয়ে করতে না পেরে ক্ষুদ্ধ হয়।
গত ২৭ নভেম্বর গৃহবধূ স্বামীর গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে শিবচর যায়। এ সময় মিঠুন পূর্বে ধারন করা তার সঙ্গের সেই আপত্তিকর ভিডিও ও ছবি গৃহবধূর স্বামীর হাতে তুলে দেয়। এতে করে তাদের দাম্পত্য জীবনে কলহের সৃষ্টি হয়। ফলে সংসার ভাংগার উপক্রম হয়। গত ১৫ ফেব্রুয়ারী জয়নগর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ নামে ফেইসবুকের একটি আইডি থেকে ঐ গৃহবধূর আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে দেয়া হয় বলে বিভিন্ন মিডিয়ায় সংবাদ প্রচার করা হয়।
এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক ভাবে তোলপাড় শুরু হয়। জাজিরা থানা পুলিশ স্বেচ্ছাসেবকলীগ নেতা মিঠুনকে আটক করতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালায়। কোথাও তাকে খুজে পাওয়া যায়নি। সে পলাতক রয়েছে। এ দিকে গৃহবধূর বাড়িতে গিয়ে তার বাবা আঃ হামিদ সিকদার ছাড়া আর কাউকেই পাওয়া যায়নি।
তার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। অভিযোগের ভিত্তিতে আশরাফুল ইসলাম মিঠুন ও সনিয়া আকতার তানজিলা নামে ফেইসবুক আইডতে গিয়ে অশীøল ভিডিও ও ছবি দেখতে পাওয়া যায়।
এ ব্যাপারে গৃহবধূর বাবা আঃ হামিদ সিকদার বলেন, আমার মেয়েকে অনেকদিন আগেই পার্শ্ববতী উপজেলায় বিয়ে দিয়েছি। এ সব বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
জেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মোঃ এনামূল হক মুন্সি বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর মিঠুনকে সাময়িক ভাবে বহিঃস্কার করা হয়েছে। পাশাপাশি জাজিরা উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকলীগের সাধারন সম্পাদক এমদাদুল হক কে প্রধান করে ৭ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন দিবে। সত্যতা পাওয়া গেলে স্থায়ী ভাবে বহিঃস্কার করা হবে।
জাজিরা থানার ওসি মোঃ এনামূল হক বলেন, এ বিষয়ে কেউ আমার কাছে কোন অভিযোগ করেনি। পত্রিকায় খবর প্রকাশের পরে আমরা এলাকায় গিয়ে কাউকেই পাইনি। মিঠুন পলাতক রয়েছে। গৃহবধূর বাবা জানিয়েছে সে এ বিষয়ে কিছুই জানেন না। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।