হাসনাহেনা ও সাকিব। এক বছরের প্রেমের পর বিয়ে। দেড় বছর আগে বিয়ে করেন দুইজন। মাত্র ২১ দিন আগে তাদের ঘর আলো করে এসেছে একটি ছেলে সন্তান। সুখের সংসারের ভেতর হঠাৎ কালোছায়া এসে সব তছনছ করে দিয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আধুনগর রশিদার ঘোনা এলাকা থেকে গৃহবধূ হাসনাহেনা বিউটির (২০) মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্বামী সাকিবকে মৃত্যু রহস্যজনক হিসেবে ধরে আটক করা হয়েছে।
ঘটনার পরপরই নিহতের শ্বাশুড়ি ফাতেমা বেগম পালিয়ে যান বলে জানা গেছে। স্থানীয় সূত্র জানায়, মঙ্গলবার বিকেলে হঠাৎ জানা যায় গৃহবধূ হাসনাহেনা মারা গেছে, তাকে রশিদার ঘোনা এলাকার একটি কবরস্থানে গোপনে দাফন করা হচ্ছে। এ খবর স্থানীয়রা পুলিশকে জানালে, নিহতের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় থানায়। এর পরপরই নিহতের স্বামী সাকিবকে আটক করে লোহাগাড়া থানা পুলিশ।
নিহত হাসনাহেনা উপজেলার দয়ারপাড়া যুবলীগ নেতা জাফর আহমদের কন্যা। হাসনাহেনা লোহাগাড়া উপজেলা সদরের ফোরকান টাওয়ারে ভাড়া বাসায় স্বামীর পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। স্বামী সাকিবের পরিবারে রয়েছেন তার মা ও ভাই-বোন।
নিহতের স্বামী সাকিবের বরাতে লোহাগাড়া থানার এসআই হাসেম জানান, সকালে স্ত্রী হাসনাহেরা সঙ্গে ঝগড়া হয় সাকিবের। এরপর সাকিব ঘর থেকে বেরিয়ে যান। কিছুক্ষণ পরে হাসনাহেনা সাকিবকে ফোন করে জানান, তিনি হারপিক খেয়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে ঘরে ফিরে হাসনাহেনাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
তবে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই আলাউদ্দিন তালুকদার নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ ধরনের কোনো রোগী আজ হাসপাতালে আসেনি।’
নিহত গৃহবধূর বাবা জাফর আহমদ বলেন, আমরা ভাড়াটিয়াদের মাধ্যমে জানতে পারি, সকালে আমার মেয়ে ও মেয়ে জামাই সাকিবের ঝগড়া হয়। ঝগড়ার একপর্যায়ে বাসার লোকজন হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে মৃত্যু হলে আমাদের না জানিয়ে দাফন করার চেষ্টা করা হয়। পরে গোপনে দাফনের বিষয় জানতে পেরে এলাকার লোকজন উপজেলার রশিদার ঘোনা এলাকায় গেলে হাসনাহেনার মরদেহ নিয়ে থানায় নিয়ে আসে।আমার মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা না করলে, গোপনে দাফন করা ব্যবস্থা করছে কেন?
এসআই হাসেম বলেন, এ ঘটনায় নিহত গৃহবধূর স্বামী সাকিবকে আটক করা হয়েছে। মৃত্যুর রহস্য উদঘাটন করার জন্য নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে।