ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ শুরুর আগে স্থানীয় দল সেন্ট কিটস অ্যান্ড নেভিসের বিপক্ষে ৩ দিনের ম্যাচ ড্র করলো বাংলাদেশ। ম্যাচের তৃতীয় ও শেষ দিনে বাংলাদেশী বোলার ও ব্যাটসমানরা দেখিয়েছে দারুণ পারফরমেন্স। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের দুই ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম (১০৬*) ও নাসির হোসেন (১০০) দুর্দান্ত সেঞ্চুরি করেছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটসম্যানদের রানে ফেরাটা স্বস্তির বার্তা বয়ে এনেছে বাংলাদেশ শিবিরে। বাংলাদেশের প্রথম ইনিংসে ৭ উইকেটে ৩৭৭ রানের জবাবে ম্যাচের তৃতীয় দিন সেন্ট কিটস প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেটে ২৩২ রান নিয়ে ব্যাট করতে নামে। বাংলাদেশের নবাগত স্পিনার বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও পার্টটাইম স্পিনার শুভাগত হোমের দারুণ বোলিংয়ে সেন্ট কিটস অলআউট হয় ৩৯৯ রানে। ২২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে দারুণ সূচনা করে বাংলাদেশ। দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তামিম ইকবাল ও শামসুর রহমান গড়েন ৯৪ রানের জুটি। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেটে ১৪৮ রান তোলার পর ম্যাচ ড্র হয়ে যায়। তবে বাংলাদেশের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যানকে আউট করতে পারেনি সেন্ট কিটসের বোলাররা। তামিম ইকবাল ৪৩ ও শামসুর রহমান ৪৬ রান করে অন্য ব্যাটসম্যানদের ব্যাট করার সুযোগ করে দেয়ার জন্য রিটায়ার্ড আউট হন। তামিম ২টি ছক্কা ও ৩টি চারের সাহায্যে ৬৫ বলে এই রান করেন। আর শামসুর রহমান ৮টি চারের সাহায্যে ৬৩ বলে করেন এই রান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডের দু’টিতে খেলেছিলেন শামসুর রহমান। করেছিলেন ৮ ও ৪ রান। কিন্তু টেস্ট সিরিজের আগে তার রানে ফেরাটা অনেক স্বস্তি দিয়েছে। তবে ইমরুল কায়েস এখনও দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে চলেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে তিন ওয়ানডেতে তিনি করেছেন ৯, ১ ও ১ রান। সেন্ট কিটসের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৪৪ রান করে কিছুটা প্রত্যাবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছিলেন তিনি। তবে দ্বিতীয় ইনিংসে আবারও ব্যর্থ হলেন। ৮ বল মোকাবিলায় মাত্র ৯ রানে আউট হন। প্রথম ইনিংসে সেঞ্চুরি করা অধিনায়ক মুশফিক ব্যাটিং অর্ডার পিছিয়ে সুযোগ করে দেন মাহমুদুল্লাহ ও এনামুল হক বিজয়কে। মাহমুদুল্লাহ শেষ পর্যন্ত ৪৬ বলে ২৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
এর আগে ৭০ রানে অপরাজিত থেকে তৃতীয় দিনে ব্যাট করতে নামা শিবনারায়ণ চন্দরপল আদায় করে নেন দারুণ এক সেঞ্চুরি। রুবেল হোসেনের বলে শুভাগত হোমের হাতে ধরা পড়ার আগে করেন ৩১৫ বলে ১৮৩ রান। হাঁকান ২টি ছক্কা ও ২০টি চার। সেন্ট কিটসের শেষ ব্যাটসমান হিসেবে আউট হন ওয়েস্ট ইন্ডিজ জাতীয় দলের দীর্ঘদিনের এ কাণ্ডারি। আগের দিনে ১ রানে অপরাজিত জেরেমিয়াহ লোইস করেন ৩৫ রান। চন্দরপলের সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে গড়েন ৯৪ রানের জুটি। বল হাতে এদিন টেস্ট অভিষেকের অপেক্ষায় থাকা স্পিনার তাইজুল ইসলাম ও অলরাউন্ডার শুভাগত হোম দারুণ দৃষ্টি কেড়েছেন। দু’জনই করেছেন নিয়ন্ত্রিত বোলিং। তাইজুল ওভারপ্রতি ৩.৫১ করে রান দিয়ে ১০৯ রানের বিনিময়ে নিয়েছেন ৩ উইকেট। আর শুভাগত ওভারপ্রতি ২.৮ রান দিয়ে ৪৮ রানে নিয়েছেন ৩ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথমটি শুরু হবে ৫ই সেপ্টেম্বর কিংসটনে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ ১ম ইনিংস: ৩৭৭/৭
সেন্ট কিটস ১ম ইনিংস: ৩৯৯ (জেফার্স ১১৮, চন্দরপল ১৮৩, লোইস ৩৫, রুবেল ৩/৯০, তাইজুল ৩/১০৯, শুভাগত ৩/৪৮)
বাংলাদেশ ২য় ইনিংস: ১৪৮/৪ (তামিম ৪৩ (রিটায়ার্ড), শামসুর ৪৬ (রিটায়ার্ড), মাহমুদুল্লাহ ২৪*, এনামুল ১৫, বেরিজ ১/৪৮, মার্টিনা ১/৪৫)
ফল: ম্যাচ ড্র