না ফেরার দেশে চলে গেলেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ও একুশে পদকপ্রাপ্ত বরেণ্য চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম (ইন্না লিল্লাহি … রাজিউন)। আজ ভোর ৫টা ৫১ মিনিটে তিনি ইন্তিকাল করেন। তার বয়স হয়েছিল ৭৩ বছর। তিনি রাজধানীর ল্যাব এইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর আগে সংকটাপন্ন অবস্থায় লাইফ সাপোর্টে ছিলেন প্রখ্যাত এ নির্মাতা। গতকাল সকাল ১০টার দিকে হঠাৎ তার রক্তচাপ মারাত্মকভাবে কমে যায়। তার শ্বাসপ্রশ্বাস নিতেও খুব কষ্ট হচ্ছিল। এ অবস্থায় কৃত্রিমভাবেই তার রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ ও শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যবস্থা করা হয়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রখ্যাত এই চলচ্চিত্রকারের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।
দেশীয় চলচ্চিত্রের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র চাষী নজরুল ইসলাম। একজন দক্ষ নির্মাতা হিসেবে এ অঙ্গনে যার বিচরণ চার দশকেরও বেশি সময় ধরে। চলচ্চিত্র পরিচালনা প্রধান ক্ষেত্র হলেও প্রযোজনা ও অভিনয়েও ছিল তার উল্লেখযোগ্য পদচারণা। প্রয়াত পরিচালক ফতেহ লোহানীর সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ করার মধ্য দিয়ে ১৯৬২ সালে চাষী নজরুল ইসলাম চলচ্চিত্রের সঙ্গে সম্পৃক্ত হন। ১৯৬৩ সালে তিনি কাজ করেন প্রখ্যাত সাংবাদিক ও চলচ্চিত্র নির্মাতা ওবায়দুল হকের সঙ্গে। মুক্তিযুদ্ধের ওপর নির্মিত বাংলাদেশের প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওরা ১১ জন’-এর নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম নির্মাণ করেছেন ২২টি পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র। এর মধ্যে ‘ওরা ১১ জন’ ছাড়াও রয়েছে ‘সংগ্রাম, দেবদাস’, ‘ভাল মানুষ’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘শুভদা’, ‘বেহুলা লক্ষ্মীন্দর’, ‘দাঙ্গা-ফ্যাসাদ’, ‘বিরহ ব্যথা’, ‘লেডি স্মাগলার’, ‘বাসনা’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’, ‘শাস্তি’, ‘সুভা’, ‘দুই পুরুষ’, ‘শিল্পী’, ‘হাছনরাজা’, ‘ মেঘের পওে মেঘ’, ‘ধ্রুবতারা’, ‘রঙিন দেবদাস’ প্রভৃতি। চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৪১ সালের ২৩ অক্টোবর শ্রীনগর (বিক্রমপুর) থানার সমষপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।