জাহিদুর রহমান তারিক, ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার লাঙ্গলবাদ প্রাইভেট হাসপাতালে হাতুড়ে ডাক্তারের সিজারে সুমী খাতুন (৩০) নামের এক প্রসুতী মায়ের মৃত্যু হয়েছে। বুধবার রাত ১০টার দিকে সে মারা যায়। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ জনতা হাসপাতালে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে। বৃহস্পতিবার বিকালে নিহতের স্বজনদের সাথে ক্লীনিক মালিক পক্ষ ২ লাখ টাকার রফা-দফা করার অভিযোগ ওঠে। ঘটনার পর থেকে কথিত হাতুড়ে চিকিৎসক আব্দুর রশিদ গা ঢাকা দেয়। ঝিনাইদহের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) গোপিনাথ কানজিলাল ও এলাকাবাসি জানান, জেলার শৈলকুপা উপজেলার আলফাপুর গ্রামের জিন্নাহ আলমের মেয়ে সুমী খাতুন বুধবার দুপুর ২ টার দিকে প্রসুতীর ব্যাথা নিয়ে লাঙ্গলবাদ প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি হয়। পরে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে হাসপাতালের মালিক তরিকুল ইসলাম রাজু ও পরিচালক শাহিন আ৩ার পলাশ ভর্তিরত স্বজনদের কাছে সার্জারি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক পরিচয় দিয়ে স্থানীয় হাতুড়ে ডাক্তার আব্দুর রশিদকে দিয়ে সিজার করায়। ঐ রাতে সিজার করার পর বাচ্চা সুস্থ থাকলেও প্রসূতি মা সুমী খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়ে। সে সময়ে হাসপাতালের মালিক পক্ষ অবস্থা বেগতিক দেখে মাগুরা সদর হাসপাতালে রেফার্ড করে। তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত ১০টার দিকে তার মৃত্যু হয়। বিষয়টি রোগীর স্বজন ও এলাকাবাসির মধ্যে জানা জানি হলে বৃহস্পতিবার সকালে হাসপাতাল ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সহকারী পুলিশ সুপার সক্রিয় ফোর্স নিয়ে ঘটনা স্থলে গেলে ক্লীনিক মালিক রাজু, পলাশ ও হাতুড়ে চিকিৎসক আব্দুর রশিদ গা ঢাকা দেয়। বৃহস্পতিবার দুপুরের দিকে হাসপাতালের মালিক পক্ষ নিহত স্বজনদের ২লাখ টাকার বিনিময়ে ম্যানেজ করার ঘটনায় এলাকায় চাউর হয়ে উঠেছে। এ ব্যপারে হাসপাতালের মালিক তরিকুল ইসলাম রাজুর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করে তাকে পাওয়া যায়নি। এ বিষয়ে শৈলকুপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ হাশেম খান জানান, ঘটনাটি শুনেছি। নিহতের স্বজনেরা এজাহার দিতে আসলে তা প্রয়োজণীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্ল্যেখ্য, গত বছরের ৮ ডিসেম্বর শৈলকুপা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোবাইল কোর্ট বসিয়ে হাসপাতালটিতে জরিমান ও সিলগালা করে দেয়। এছাড়াও ওই হাসপাতালের পরিচালক শাহিন আক্তার পলাশ ওই হাসপাতালসহ ৩টি ক্লিনিকের নামে ৩টি পয়জন লাইসেন্স দিয়ে প্যাথেডিন ও মরফিন উত্তোলন করে অবৈধভাবে বিক্রি করে বলে অভিযোগ রয়েছে।