ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ঢিমেতালে চলছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন কার্যক্রম। কোম্পানির এক কর্মকর্তার একগুঁয়েমির কারণে ঢিমেতালে চলছে অবৈধ গ্যাস সংযোগ কার্যক্রম।
আর এ অভিযোগ উঠেছে—ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস শাখা (ইএস) ম্যানেজার শফিকুল হকের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, জেলার সদর উপজেলার বুধল ইউনিয়নের মালিহাতা, সুতিয়ারাসহ সুহিলপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে হাজার হাজার ফিট পাইপ দিয়ে অবৈধ গ্যাস সংযোগ দিয়ে শত শত চুলা ব্যবহার করলেও তা বিচ্ছিন্নে কার্যকর কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল হক।
এ ছাড়া শহরের গোকর্ণঘাট, পাইকপাড়া, শেরপুরসহ অনেক জায়গায় একাধিক গ্রাহক দিব্যি অবৈধ গ্যাস সংযোগ বছরের পর বছর ব্যবহার করে যাচ্ছেন।
অনুসন্ধানে আরো জানা গেছে, বর্তমানে সরকারিভাবে সারা দেশে নতুন গ্যাস সংযোগ, চুলা বাড়ানো, রাইজার এক বাড়ি থেকে অন্য বাড়িতে স্থানান্তরের কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। তার পরও কাগজপত্র যাচাই-বাছাই ও এলাকায় সার্ভে না করে পশ্চিম মেড্ডা এলাকার শরীফপুর মহল্লার নুরুল ইসলাম নামে এক গ্রাহকের একটি রাইজার স্থানান্তর করা হয়েছে পারভীন প্যালেস নামের আরেকটি বাড়িতে; আর এ স্থানান্তর কাজ করেছে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কর্তৃপক্ষ—যা রাইজার স্থানান্তর নীতিমালায় পড়ে না।
এ ব্যাপারে আকাশ নামে এলাকার এক ব্যক্তি বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও পারভীন প্যালেস নামে বাড়ির সংযোগ বিচ্ছিন্নে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেননি ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল হক।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, কাউতলী এলাকায় জেলা প্রশাসকের বাংলোর পশ্চিম-দক্ষিণ দিকে একটি বহুতল ভবনে অনুমোদনহীনভাবে অনেকগুলো চুলা ব্যবহার করার কারণে ইএস শাখার তৎকালীন ম্যানেজার ওই ভবনের গ্যাস সংযোগটি বিচ্ছিন্ন করে দেন। পরে ভবন মালিক ও ঠিকাদার মিলে সংযোগটি পুনরায় চালু করেন। ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস শাখার বর্তমান ম্যানেজার শফিকুল হককে বিষয়টি অবহিত করলে তিনি ওই ভবনটিতে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন না করে তাৎক্ষণিক ফিরে আসেন। এ ছাড়া কিছুদিন আগে ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল হক অবৈধ গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন অভিযানে পূর্ব পাইকপাড়ার বিজয় সেনের বাড়িতে গিয়ে অনুমোদনহীনভাবে একাধিক চুলা ব্যবহার হচ্ছে দেখেও তিনি সংযোগ বিচ্ছিন্ন অথবা গ্রাহকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে অদৃশ্য কারণে থেকে চলে আসেন।
জানা গেছে, বিজয় সেনের ব্যবহৃত গ্যাস সংযোগটি শহরের মেড্ডা এলাকার নান্টু আচার্যের নামে অনুমোদনকৃত। মেড্ডা এলাকার গ্রাহকের গ্যাস সংযোগ কীভাবে পূর্ব পাইকপাড়ায় ব্যবহার হচ্ছে প্রশ্ন জনমনে।
এ ব্যাপারে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি, ব্রাহ্মণবাড়িয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ডিজিএম প্রকৌশলী জাহিদুর রেজার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, অবৈধ সংযোগের ব্যাপারে আমরা খোঁজখবর নিচ্ছি ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করছি।
এ ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ার শফিকুল হকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি প্রথমে কথা বলতে রাজি না হলেও পরে জানান, অবৈধ সংযোগের ব্যাপারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।