খুনের বদলা হিসেবে খুন হয়েছেন আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলাম। হত্যা মামলা গ্রহণের পর গোবিন্দগঞ্জ থানা পুলিশ প্রাথমিকভাবে খুনের মোটিভ নিশ্চিত হয়েছে। রাজনৈতিক দ্বন্দ্বে খুন হয়েছে এটি মানতে নারাজ তারা। তবে জমি দখল, আধিপত্য বিস্তার ও খাস পুকুর লিজ নেয়াকে কেন্দ্র করে ঘটনার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ থানার ওসি জাহিদুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিনের দ্বন্দ্বের জের ধরে রোববার রাতে সেই পুকুর পাড়েই ওত পেতে থাকা সন্ত্রাসীরা আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলামকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। ওই অবস্থায় তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে তিনি মারা যান। তিনি ছিলেন তেঘরা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ওয়ার্ড কমিটির সাধারণ সম্পাদক। এ ঘটনার পর স্থানীয় আওয়ামী লীগ রবিউল হত্যাকাণ্ডকে বিরোধীদল বিএনপি নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের শিকার বলে অভিযোগ করেন। সোমবার রাতে ময়না তদন্তের পর রবিউলকে দাফন করা হয়। গতকাল নিহত রবিউলের পিতা মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী বাদী হয়ে ৬ জনের বিরুদ্ধে গোবিন্দগঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। ঘটনার পর থেকে খুনিরা পালিয়েছে। কামদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের লোকজন রাজনৈতিক হত্যার শিকার হয়েছে বলে অভিযোগ জানালেও পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে খুনের আসল মোটিভ বেরিয়ে এসেছে। পুলিশ জানায়, প্রায় ৬ বছর আগে তেঘরা গ্রামে একটি খাস পুকুর দখল নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা রবিউলের সঙ্গে বিএনপি নেতা কুদ্দুসের দ্বন্দ্ব হয়। ওই পুকুর দখলকে কেন্দ্র করে বিএনপি নেতা কুদ্দুসকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। ওই কুদ্দুস হত্যার প্রধান আসামি ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল। তাদের দু’জনের বাড়ি একই ইউনিয়নে। দু’জনেই বিত্তবান প্রভাবশালী ও সম্পদশালী। কুদ্দুস হত্যাকাণ্ডের প্রধান আসামি হিসেবে কুদ্দুস গ্রুপের টার্গেটে পরিণত হয় রবিউল। বিএনবি নেতা কুদ্দুস হত্যাকাণ্ডের পর খাস পুকুরটি রবিউলের দখলে চলে যায়। এতে ক্ষুব্ধ হয় বিএনপি নেতাকর্মী ও কুদ্দুস গ্রুপের লোকজন। বিএনপি নেতা কুদ্দুস হত্যার প্রধান আসামি হিসেবে জামিনে জেল থেকে বেরিয়ে আসেন রবিউল। দাপটের সঙ্গে দল ও নিজেকে পরিচালনা করতেন রবিউল। তার একটি মেয়ের বিয়েও দিয়েছেন। আরেক ছেলে মায়ের কোলে। তার পিতা মুক্তিযোদ্ধা আনছার আলী, মা রেহেনা বেগম ও স্ত্রী মাকসুদাকে নিয়ে পৈতৃক ভিটায় বাস করতেন। বিশাল এলাকাজুড়ে ধানক্ষেত । মাঝে মাঝে বাড়িঘর আর লোকালয়। আশপাশে জঙ্গল তার মাঝখানে বিশাল বিশাল খাস পুকুর। এই সব খাস পুকুর দখল নিয়ে একাধিক খুনের ঘটনা ঘটেছে। সেই খুনের বদলা খুন হিসেবে রোববার রাতে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কামদিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা রবিউল ইসলাম (৪৫)-কে কুপিয়ে হত্যা করে দুবৃর্ত্তরা।