একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার সূত্রে জানা যায়, সহিংসতার প্রস্তুতিও নিচ্ছে দলটি। জ্বালাও-পোড়াও সঙ্গে পুলিশের ওপর হামলা করে পুরো পুলিশ বাহিনীর মনোবল ভেঙে দিতে চায় তারা ।
এদিকে জামায়াতের তরফ থেকে বিএনপিকে সাফ জানিয়ে দেয়া হয়েছে, আন্দোলনের শুরু বিএনপিকেই করতে হবে। এরপর যোগ দেবে জামায়াত। কারণ ৫ জানুয়ারির আগে জামায়াত সারাদেশে তাণ্ডব চালিয়ে অনেক এলাকার নিয়ন্ত্রণও প্রায় নিয়েই ফেলেছিল। কিন্তু বিএনপি পাশে না দাঁড়ানোর কারণে তাদের সব চেষ্টাই বিফলে যায়। তাই এবার বিএনপি শুরু করলে সঙ্গে যোগ দেবে জামায়াতের নেতাকর্মীরা এমনটাই জানিয়েছে তারা। সরকারের একাধিক গোয়েন্দা সংস্থার দেয়া রিপোর্টে এবং নতথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ ও বিএনপি-জামায়াতের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সরকারের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, বিএনপি ও জামায়াতের পুরো কার্যক্রমের উপরই নজর রাখা হচ্ছে। তাদের এমন কোন সুযোগ দেয়া হবে না যাতে সরকার পতনের মতো আন্দোলন তারা করতে পারে।
২০ দলীয় জোটের আগামী শনিবারের সমাবেশকে সামনে রেখে মিছিল করেছে গাজীপুর মহানগর ছাত্রশিবির। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় মিছিলটি ভাওয়াল কলেজ থেকে শুরু হয়ে চান্দনা চৌরাস্তা মোড়ে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়।
সমাবেশে গাজীপুর মহানগর সভাপতি সালাহ উদ্দিন আইয়ুবী সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলেন, “২৭ ডিসেম্বরের সমাবেশে বাধা দেয়া হলে এর সমুচিত জবাব দেওয়া হবে। যেকোনো মূল্যে সমাবেশ বাস্তবায়নের ঘোষণা দেন তিনি।”এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক হাসনাইন আহমেদ, অর্থ সম্পাদক তাজদীদ বিন ওয়াদুদ, এইচআরডি সম্পাদক ফজলুল হক নোমান ও প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান।
শনিবার ভাওয়াল কলেজ মাঠে ২০ দলের পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ হওয়ার কথা। কিন্তু সরকারির দলের ছাত্রসংগঠন সমাবেশ করতে দেবে না বলে হুমকি দিয়েছে। এ নিয়ে সেখানে কদিন ধরে চলছে উত্তেজনা।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, ৫ জানুয়ারিকে সামনে রেখে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। কাউকে নাশকতা করার কোন সুযোগ দেয়া হবে না। নির্দিষ্ট মেয়াদ পর্যন্তই ক্ষমতায় থাকবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার। আর যে কোন ধরনের বিশৃঙ্খলা রুখে দেয়ার জন্য প্রস্তুত রয়েছে র্যাব-পুলিশসহ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। বিএনপির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, গত ৫ জানুয়ারির আগে সারাদেশে আন্দোলন জমাতে পারলেও রাজধানীতে কিছু না করতে পারার কারণে পার হয়ে গেছে আওয়ামী লীগ। এবার আর সে ধরনের কোন ভুল তারা করতে চান না। এবার সবকিছুই হবে রাজধানী কেন্দ্রিক। প্রয়োজন হলে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপও চলবে।
তবে গোয়েন্দা কর্মকর্তারা বলছেন, বিএনপির এই হার্ডলাইনের আন্দোলনে একটি অংশের বিরোধিতাও রয়েছে। তাদের দাবি, এই আন্দোলন কোনভাবে ব্যর্থ হলে সহসাই আর সরকারের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারা যাবে না। সরকার ও পুলিশ বাহিনী আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি বেপরোয়া হয়ে যাবে। সব নেতাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠাবে। ফলে বিএনপির ভবিষ্যতে আন্দোলন গুছিয়ে উঠতে বেশ সময় লেগে যাবে। তাই এখনই হার্ডলাইন না গিয়ে আর একটু গুছিয়ে একবারেই আন্দোলনে যাওয়ার পক্ষে মত অনেক নেতার। তবে ৫ জানুয়ারিকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যে চরম উৎকণ্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।