অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর কর্মসংস্থান নিশ্চিত ও বিদেশে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির লক্ষ্যে সরকার সারা দেশে ৭০টি টিটিসি প্রতিষ্ঠা করে। কিন্তু ৬টি মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ ২৬টি টিটিসি এখনো উন্নয়ন খাত থেকে রাজস্ব খাতে নেয়া হয়নি।
এতে অর্থ ছাড় পেতে দেরি হওয়ায় ৮ মাস ধরে বেতন পাচ্ছেন না এসব টিটিসির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারী। এছাড়া অপ্রতুল জনবল, প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত ও অবকাঠামো সুবিধার অভাবে সার্বিক একাডেমিক ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।
কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে পর্যায়ক্রমে দেশের ৬৪টি জেলায় কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে সরকার। পাশাপাশি নারীর চাকুরীর সংস্থান ও বিদেশে দক্ষ নারী জনশক্তি রপ্তানির লক্ষ্যে ২০০৬ সালে চট্টগ্রামসহ ৬টি বিভাগীয় শহরে মহিলা টিটিসি প্রতিষ্ঠা করা হয়।
কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও দীর্ঘ সময়ে ৬টি মহিলা টিটিসিসহ ২৬টি জেলার টিটিসি রাজস্ব খাতে যায়নি। এতে ৮ মাসের বেতন আটকে থাকায় এসব টিটিসি’র ১ হাজার ৬শ’ ৪১ জন শিক্ষক কর্মকর্তা-কর্মচারী চরম কষ্টের মধ্যে আছেন।
এ বিষয়ে সিএমটিটিসি’র গার্মেন্টস ট্রেডের সিনিয়র প্রশিক্ষক শাহানূর পারভিন বলেন, ‘আমরা যারা প্রশিক্ষক এখানে প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকি তাদের বেতন প্রতিমাসে হয় না। বেতন হতে ছয়-সাত মাস লেগে যায়।’
আর সিএমটিটিসি’র ইলেক্ট্রনিক্স ট্রেডের ইনচার্জ লুৎফুর নাহার বলেন, ‘আমরা যদি বেতন নিয়মিত পাই। তাহলে আমরা আরও বেশি মনোযোগী হতে পারবো।’
এদিকে প্রতিষ্ঠার পর নতুন করে শিক্ষক ও জনবল নিয়োগ না দেয়ায় চট্টগ্রাম মহিলা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রসহ উন্নয়ন খাতের টিটিসিগুলো চলছে অর্ধেক শিক্ষক ও জনবল দিয়ে।
এ ব্যাপারে আর্কিটেকচার ড্রাফটিংয়ের শিক্ষক জান্নাতুল হুর বলেন, ‘আমাদের সীমিত কম্পিউটার হওয়ার কারণে প্রশিক্ষণার্থীরা ঠিক মতো শিখতে পারছে না। এছাড়া শিক্ষকও কম।’
এ অবস্থায় মানসম্মত প্রশিক্ষণ নিশ্চিত করতে ২৬টি টিটিসিকে রাজস্ব খাতে স্থানান্তরের পাশাপাশি প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ ও আধুনিক যন্ত্রপাতি সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সিএমটিটিসি’র অধ্যক্ষ প্রকৌশলী এবিএম শরিফুল ইসলাম বলেন, ‘এত বছর পরও প্রতিষ্ঠানটি রাজস্ব খাতে যাচ্ছে না। আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠান রাজস্ব খাতে নেওয়া হোক। প্রত্যেকটা বিভাগকে আধুনিকায়ন করাসহ শিক্ষকদের বেতন নিশ্চিত করা হোক।’
৭০টি টিটিসি থেকে কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত হয়ে প্রতিবছর এক লাখ শিক্ষার্থী বের হয়।