নিজেদের শেষ ম্যাচে মাশরাফির কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সকে হারিয়ে শীর্ষে উঠে এলো সাকিবের রংপুর রাইডার্স। এই জয়ে ১০ ম্যাচের ৭ জয়ে রংপুরের অর্জন ১৪ পয়েন্ট। অন্যদিকে ৯ ম্যাচে ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ভিক্টোরিয়ান্সররা। তবে মাশরাফির দলের শেষ লড়াই সিলেট সুপার স্টারসের বিপক্ষে। সেই ম্যাচে জিতলেই তারাও বিপিএল-এ প্রথম পর্ব শেষ করতে পারে শীর্ষে থেকে। দুই দল এরই মধ্যে নিশ্চিত করে ফেলেছিল সেমি ফাইনাল। তাই গতকালের লড়াটি ছিল শুধু শীর্ষ স্থানের জন্য। টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে রংপুর রাইডার্স সংগ্রহ করে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রান। জবাব দিতে নেমে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছড়িয়ে শেষ পর্যন্ত ২১ রানে হারে কুমিল্লা।
১৫৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে সাকিব আল হাসানের রংপুরকে ভড়কে দিয়েছিলেন ইমরুল কায়েস। শীর্ষে ওঠার লড়াইয়ে কুমিল্লাকে বেঁধে ফেলতে অধিনায়ক নিজেই এসেছিলেন বোলিং আক্রমণ শুরু করতে। কিন্তু সাকিবের সেই ওভারে ইমরুল আদায় করে নেন দু’টি চারে মার সহ ১০ রান। এরপর তৃতীয় ওভারে আক্রমণে আসেন স্পিনার আরাফাত সানি। কিন্তু ইমরুল কায়েস যেন সবাইকেই গুঁড়িয়ে দিতে চাইছিলেন। সানির তৃতীয় বলে লং অন দিয়ে বিশাল এক ছয়ের মার হাঁকান কায়েস। এরপরের বলে মারের চারের মার। ইমরুলের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর রূপ দেখা যায় লঙ্কান থিসেরার পেরেরার ওভারে। প্রথম বল ওয়াইড দিয়েই শুরু করেন পেরেরা। দ্বিতীয় বলে কোন রান নেই তৃতীয় বলেই চারের মার, শেষ পর্যন্ত পেরেরার ওভারটি শেষ হয় ৯ বলে ১৬ রান খরচ করে। এরপর মো. নবী রানের লাগাম টানেন ভিক্টোরিয়ান্সদের। তবে পরের ওভারে ইমরুলের প্রকোপ থেকে রক্ষা করেন ড্যারেন স্যামি। নিজের প্রথম বলেই ইমরুলকে থার্ডম্যানে ক্যাচে পরিণত করেন স্যামি। ২৪ বলে একটি ৬ ও ৬টি চারের মারে ঝড় তুলে ৩৮ রান করে আউট হন ইমরুল। এরপর অবশ্য ছোট একটি বিপর্য ঘটে। দলীয় ৪৮ রানে ইমরুলের বিদায়ের পর স্কোর বোর্ডে ১৫ রান যোগ হতেই আরও ৩টি উইকেটর পতন ঘটে। সাকলাইন সজীব মাহমুদুল হাসানকে ৮ রানে ও শেহজাদকে ১০, ও জায়দিকে ২ রানে নবী আউট করেন। এরপর ৫ম উইকেটে গড়ে কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তোলেন শুভাগত হোম ও শোয়েব মালিক। কিন্তু আরাফাত সানি ১২ রান করা শুভগতকে আউট করে সেই প্রতিরোধ ভাঙেন। একটি ছয়ের মার হাঁকিয়ে ৯ রানে আউট হন আন্দ্রে রাসেল। দলের হার এড়াতে মাঠে নামেন অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। কিন্তু রাসেলের মতই একটি ছয়ের মার হাঁকিয়ে পরের বলে আউট হন তিনি। তারপর শোয়েব মালিকও ১৫ রান করে আউট হলে নিভে আসে কুমিল্লার জয়ের আশা। তবে শেষ দিনে ব্যাট করতে নেমে পেসার আবু হায়দার রনি ছয় বলে ১৮ রান করে হারের ব্যবধানটা কমিয়ে আনেন। কিন্তু জয় এনে দিতে পারেনি।
এর আগে ভিক্টোরিয়ান্সদের বিপক্ষে টসে হেরে ব্যাট করতে নেমে জহুারুল ইসলাম অমির অপরাজিত ফিফটিতে ৬ উইকেট হারিয়ে ১৫৩ রানের রান সংগ্রহ করে রংপুর রাইডার্স। তবে শুরুটা ভালো হয়নি রংপুরের। দ্বিতীয় ওভারেই ফিরে যান সৌম্য সরকার। শোয়েব মালিককে চার হাঁকিয়ে শুরু করা এই বাঁহাতি দুই অঙ্কে যেতে পারেননি। সৌম্যকে ফেরানো সেই ওভারটি মেডেন নেন তরুণ আবু হায়দার রনি। সৌম্য আউট হওয়ার পর ক্রিজে আসেন জহুরুল। শেষ পর্যন্ত ৬২ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। তার ৫০ বলের ইনিংসটি ৭টি চার ও দু’টি ছক্কা সাজানো। শেষের দিকে ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দেড়শ’ পার হয় রংপুর। শেষ ৫ ওভারে দুই উইকেট হারিয়ে ৫৪ রান যোগ করে দলটি। কুমিল্লার আবু হায়দার দুই উইকেট নেন ২৮ রান খরচ করে।