ইরাকের মসুলে জঙ্গিগোষ্ঠী আইএসের নৃশংসতার প্রমাণ পেয়েছে জাতিসংঘ। সেখানে গণহত্যার পর তাদের মরদেহ নদীতে ফেলে দেয়া হচ্ছে বলে জানায় সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার।
এদিকে, গত কয়েকদিনে ইরাকে মার্কিন জোটের বিমান হামলায় অন্তত ৬০ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছে বলে দাবি করেছে রাশিয়া। এরইমধ্যে ইরাকের আরবিলে মসুলের সাধারণ মানুষের জন্য প্রথম বারের মতো বিভিন্ন দেশ থেকে মানবিক সহায়তা এসে পৌঁছেছে।
ইরাকের মুসলে আইএসবিরোধী চূড়ান্ত অভিযানের মধ্যেই সেখানকার সাধারণ মানুষের ওপর আইএস’র চালানো নৃশংস কর্মকাণ্ডের প্রতিবেদন তুলে ধরলো জাতিসংঘ। মঙ্গলবার সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের মুখপাত্র রুপার্ট কলভিল বলেন, মসুলে সাধারণ মানুষের ওপর গণহত্যা চালিয়ে আসছে আইএস।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনার রুপার্ট কলভিল বলেন, ‘আইএস সদস্যরা মুসলের একটি গ্রামেই ১৫ বেসামরিক নাগরিককে হত্যার পর মরদেহগুলো নদীতে ফেলে দিয়েছে। এছাড়া, শহরের বাইরের একটি ভবনে অন্তত ৫০ জন পুলিশ কর্মকর্তাকে হত্যা করেছে। এমনকি সাধারণ মানুষজনকে ধরে নিয়ে গিয়ে নিজেদের রক্ষায় তাদেরকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে আইএস।’
যুক্তরাষ্ট্র ইরাকে আইএস দমনের নামে অভিযান চালালেও; মার্কিন বিমান হামলায় বেসামরিক নাগরিক হতাহতের খবর পাওয়া গেছে। গত কয়েক দিনে হামলায় অন্তত ৬০ বেসামরিক নাগরিক নিহত হয় বলে দাবি করেছে রাশিয়া। মঙ্গলবার রাশিয়ার সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তা সের্গেই রাডস্কই এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান। মসুল অভিযান রাশিয়া গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বলেও জানান তিনি।
অন্যদিকে, ইরাকে স্থল অভিযানের জন্য তুরস্ক প্রস্তুত রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। মঙ্গলবার টেলিভিশনে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ইরাকের কুর্দি বাহিনী তুরস্কের জন্য হুমকি হলে এ স্থল অভিযান শুরু করবে তারা।
তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলুত কাভুসৌলু বলেন, ‘আমরা কখনোই কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিকে সহ্য করবো না। যুক্তরাষ্ট্রকে বলতে চাই কুর্দিরা যদি এলাকা ছেড়ে চলে যতে না চায়। আমরা জানি কিভাবে তাদেরকে বিতাড়িত করতে হবে। যুক্তরাষ্ট্র কুর্দিদের প্রশংসা করলেও সিরিয়ার বিদ্রোহী ও কুর্দি যোদ্ধাদের মধ্যে সংঘাত চলছে।’
এদিকে, মুসলের বিভিন্ন গ্রামে জঙ্গিদের গোপন সুড়ঙ্গে অভিযান চালিয়েছে ইরাকের যৌথ বাহিনী। ওইসব সুড়ঙ্গে বিদ্যুৎ,পানি, ওষুধ ও খাবারের যথেষ্ট সরবরাহ থাকায় জঙ্গিরা দীর্ঘদিন নিরাপদে অবস্থান করছে বলে জানায় ইরাকি বাহিনী।
এদিকে, মসুলের কয়েকটি গ্রাম ইরাকি যৌথ বাহিনী দখলের পর সেখানে ফিরতে শুরু করেছে সাধারণ মানুষ। তাদের বসবাসের জন্য বিভিন্ন ক্যাম্প নির্মাণ করে দিচ্ছে ইরাকি বাহিনী। এছাড়া মঙ্গলবার মসুলের সাধারণ মানুষের জন্য ইরাকের উত্তরাঞ্চলীয় এলাকা আরবিলে মানবিক সহায়তা পৌঁছেছে। মসুলে জরুরি ত্রাণ সহায়তার প্রয়োজন হলেও অনেক এলাকা আইএসের দখলে থাকায় তা সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না।