উত্তাল গুজরাটের রাজনীতি বাংলাদেশি পাটের বস্তা আমদানি কেলেঙ্কারি

চার হাজার কোটি টাকার কথিত চিনাবাদাম কেলেঙ্কারি নিয়ে গুজরাটের রাজনীতি উত্তাল ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার গুজরাটের গান্ধীনগরে আয়োজিত এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে সেই একই কথিত কেলেঙ্কারিতে যুক্ত করা হলো বাংলাদেশের নাম।

গুজরাটের বিধান সভার বিরোধী দলীয় নেতা ও সিনিয়র কংগ্রেস নেতা পরেশ ধানানি এদিন বলেছেন, আরো একটি ‘নতুন কেলেঙ্কারি’ উদ্ঘাটিত হয়েছে। আর সেটা হলো রাজ্যের বিজেপি সরকার ওই চিনেবাদাম বোঝাই করার জন্য বাংলাদেশের কয়েকটি সংস্থার কাছ থেকে পাটের থলি আমদানি করেছিল। আর তাতেও তারা দুর্নীতি করেছে।
বাংলাদেশের কোন কোন সংস্থার কাছ থেকে বিজেপি সরকার পাটের থলি আমদানি করেছে, সে বিষয়ে কংগ্রেস নেতা কোনো ইঙ্গিত দেননি। তবে বিধান সভার বিরোধী দলীয় নেতা আরো আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে, ‘পাটের থলে কেলেঙ্কারির উৎপত্তিটা বাংলাদেশেই নিহিত থাকতে পারে।’ (দি অরিজিন অব দি হেসিয়ান স্যাকস স্ক্যাম মে লে ইন বাংলাদেশ।’)

বিরোধী দলীয় নেতা মি. ধানানির অভিযোগ, এই পাটের থলে বাংলাদেশ থেকে আমদানি করতে গিয়ে রাজ্য সরকার বাংলাদেশে প্রায় ৫০ কোটি টাকা অতিরিক্ত পরিশোধ করেছে।টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, মঙ্গলবার রাজ্য কৃষিমন্ত্রী আর সি ফালদুর সঙ্গে বৈঠকের পরপরই তিনি ওই সংবাদ সম্মেলন ডাকেন।

কংগ্রেস নেতা ধানানি বংলাদেশে কার কার কাছ থেকে পাটের থলে সংগ্রহ করেছে, তাদের প্রত্যেকের নাম, কত দরে এবং মোট কি পরিমাণ কেনা হয়েছে, তার হিসাব অবিলম্বে প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন। একইসঙ্গে তিনি এ বিষয়ে তদন্ত চালানোর দাবি করেছেন। তিনি বাংলাদেশ থেকে এ পর্যন্ত যতো পাটের থলে কেনা হয়েছে, তার মধ্যে কতোটা ইতিমধ্যে ব্যবহৃত এবং কতোটা অব্যবহৃত এবং সেসব থলে এখন কোথায় কি অবস্থায় রয়েছে, তার তথ্য প্রকাশেরও দাবি জানিয়েছেন।
মি. ধানানি এ প্রসঙ্গে আরো উল্লেখ করেন যে, চিনেবাদাম কেলেঙ্কারি তদন্তে এর আগে বারংবার বিজেপি সরকারের কাছে বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠনের দাবি জানালেও সরকার সে বিষয়ে নীরবতা পালন করছে। তিনি বলেন, চার হাজার কোটি টাকার চিনেবাদাম কেলেঙ্কারির ঘটনায় সরকার যদি বিচারবিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ প্রদান না করে তাহলে আমি আবারও ৭২ ঘণ্টার আমরণ অনশনে বসবো।

কংগ্রেস নেতা এর আগে একই বিষয়ে রাজ্যের আমেরেলিতে ৭২ ঘণ্টার এক অনশন ধর্মঘটে অংশ নিয়েছিলেন।
ওই সংবাদ সম্মেলনে কংগ্রেস নেতা পরেশ ধানানি অভিযোগ করেন যে, কৃষিতে ভর্তুকির নামে গুজরাটের বিজেপি সরকার গত ৩ বছরের ব্যবধানে এক লাখ কোটি টাকার কেলেঙ্কারি করেছে। তার কথায়, কৃষি খাতে ‘মোদিফিকেশন’ চলছে। আর তার আওতায় প্রাইভেট কোম্পানিগুলোকে কৃষকদের ‘লুট’ করে সর্বস্বান্ত করার লাইসেন্স দিয়েছে। নামকরণ করেছে শস্যবীমা স্কিম, যার আওতায় এক কোটি রুপির বেশি প্রিমিয়াম দিয়েছেন কৃষকরা। কিন্তু সরকারের কাজ হলো কৃষকদের ফতুর করা। তিনি এই স্কিম বাতিল করে বরাদ্দকৃত টাকা গ্রাম পঞ্চায়েতদের মাধ্যমে সরাসরি বিতরণের দাবি জানিয়েছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *