এশিয়ান গেমসের মাধ্যমে তিনবছর পর আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেছে পাকিস্তান। ইন্দোনেশিয়ায় নেপালকে হারিয়ে চমকে দিয়েছিল তারা। এবার আর চমক নয়। সাফ ফুটবল চ্যাম্পিয়নশিপের উদ্বোধনী ম্যাচে দাপুটে ফুটবল খেলেই শুভ সূচনা করেছে পাকিস্তান। গতকাল বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ৪০ ধাপ এগিয়ে থাকা নেপালকে হারায় ২-১ গোলে। পাকিস্তানের হাসান বশির ও মোহাম্মদ আলী গোল দু’টি করেন। পাকিস্তানের জয়সূচক গোলটি আসে শেষ বাঁশি বাজার কয়েক সেকেন্ড আগে। নেপালের গোলটি করেন বিমল গাত্রি মাগার।আগামীকাল গ্রুপের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের বিপক্ষে মাঠে নামবে পাকিস্তান। নেপালের প্রতিপক্ষ ভুটান।
২০১৫ সালের মার্চে আদালতের নিষেধাজ্ঞা আসে পাকিস্তান ফুটবল ফেডারেশনের উপর। এরপর ১০ই অক্টোবর ২০১৭ থেকে ১৩ই মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত বিশ্ব ফুটবলের শাসক সংস্থা ফিফার সাসপেনশনে ছিল পাকিস্তান। ২০১৫ সালে সাফ চ্যাম্পিয়নশিপও খেলতে পারেনি দলটি। সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছে ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে। আফগানিস্তানের বিপক্ষে খেলা ওই ম্যাচে ২-১ গোলে জিতেছিল পাকিস্তান। এরপর দীর্ঘদিন খেলার বাইরে থাকা পাকিস্তান মাত্র ৪০ দিনের প্রস্তুতি নিয়ে খেলতে এসেছে দক্ষিণ এশিয়ার বিশ্বকাপ খ্যাত সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে। প্রস্তুতির ঘাটতি শুরুতেই চোখে পড়েছে। ম্যাচের ৩ মিনিটে নেপালের অনন্ত তামাং বল নিয়ে বক্সে ঢুকে চিপ করলেও ডেনমার্কে খেলা পাকিস্তানের গোলরক্ষক ইজাজ বাটকে পরাস্ত করতে ব্যর্থ হন। ২৩ মিনিটে বা প্রান্ত থেকে বিমল গাত্রি মাগারের কোনাকোনি শট অল্পের জন্য জড়ায়নি জালে। পরের মিনিটেই ডান প্রান্ত থেকে দলীয় অধিনায়ক বিরাজ মহারাজনের শট সরাসরি গিয়ে পড়ে পাকিস্তানের গোলরক্ষকের হাতে। ম্যাচের ৩৪ মিনিটে বিরাজ মহারাজন নিজেদের বক্সে ফাউল করেন পাকিস্তানের মোহাম্মদ রিয়াজকে। পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি হাসান মাহমুদ আরাফাহ। পাকিস্তানের হাসান বশিরের কোনাকোনি শট জড়ায় জালে (১-০)। প্রথমার্ধের শেষদিকে সুযোগ এসেছিল নেপালেরও। কর্র্নার থেকে বক্সে জটলায় বল পেয়ে দারুণ হেড নিয়েছিলেন ডিফেন্ডার সুমন এরিয়াল। কিন্তু বল জালে জড়ায়নি। প্রথমার্ধের ইনজুরি টাইমে আরো একটি দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেছে নেপাল, ডান প্রান্ত থেকে বিমল গাত্রির ক্রস ছোট বক্সে পেয়েছিলেন নওয়াগ শ্রেষ্ঠা। কিন্তু পাকিস্তানি ডিফেন্ডারদের চাপের মুখে নিশ্চিত গোল থেকেই বঞ্চিত করেন দলকে। নিজেদের ডিফেন্স আগলে কাউন্টার অ্যাটাক নির্ভর ফুটবল খেলতে থাকা পাকিস্তান ব্যবধান দ্বিগুণ করার সুযোগ পেয়েছিল ম্যাচের ৭৪ মিনিটে। ফরোয়ার্ড সাদউল্লাহর ৩০ গজ দূর থেকে নেয়া শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে ৮২ মিনিটে সমতায় ফেরে নেপাল।
সুজল শ্রেষ্ঠর কর্র্নার থেকে বল পেয়ে বদলি মিডফিল্ডার নিরঞ্জন খড়কা হেড নেন। তাতে হেডে চতুরতার সহিত জালে জড়ান বিমল গাত্রি (১-১)। ম্যাচটি যখন নিশ্চিত ড্র’য়ের দিকে যাচ্ছিল ঠিক তখনই দারুণ এক গোল করে পাকিস্তান। ইনজুরি টাইমের শেষ মুহূর্তে আদিল রশীদের ক্রস হেড দিয়ে সতীর্থের উদ্দেশে পাঠান সাদুল্লাহ। বল পেয়ে হেডে নেপালের গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন মোহাম্মদ আলী।