ইসলামি প্রজাতন্ত্র ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেছেন, তার দেশের বিরুদ্ধে আমেরিকার সব ক্ষোভের মূল কারণ ইসলামি বিপ্লব ও বিপ্লবের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত ইসলামি শাসনব্যবস্থা। তিনি আজ তেহরানের আজাদি স্টেডিয়ামে ইরানের স্বেচ্ছাসেবী বাহিনীর প্রায় এক লাখ সদস্যের সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে একথা বলেন। তিনি বলেন, ইসলামি বিপ্লবের আগে ইরানের রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তি আমেরিকার নিয়ন্ত্রণে ছিল। সেটা করতে না পেরে তারা ইরানের বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ হয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, সামরিক দিক দিয়ে আমেরিকা ইরানের সঙ্গে পেরে না উঠে শেষ আশ্রয় হিসেবে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার আশ্রয় নিয়েছে। কিন্তু আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, আমাদের জাতীয় অর্থনীতির চেয়ে মার্কিন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা অনেক বেশি ভঙ্গুর। নিজস্ব অর্থনীতির ওপর ভর করে আমরা মার্কিন নিষেধাজ্ঞাকে অকার্যকর করে দেব। ওয়াশিংটন গত ৪০ বছরে ইরানের হাতে বহু ক্ষেত্রে চপেটাঘাত খেয়েছে। এখন মার্কিন নিষেধাজ্ঞা ব্যর্থ করে দেয়ার মাধ্যমে ইরানি জনগণ আরেকবার আমেরিকার গালে চপেটাঘাত করবে।
মার্কিন সরকার ইরাক, সিরিয়া, লেবানন, পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে পরাজিত হয়েছে বলে উল্লেখ করে সর্বোচ্চ নেতা বলেন, মধ্যপ্রাচ্যসহ বিভিন্ন অঞ্চলে আমেরিকার জন্য আরো পরাজয় অপেক্ষা করছে।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেয়ী বলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্ট (ডোনাল্ড ট্রাম্প) ইউরোপীয় নেতাদের বলেছেন, ইরানের পরমাণু সমঝোতা বাস্তবায়নের আগে আর দুই তিন মাস অপেক্ষা করুন। দেখবেন ইরান সরকারের পতন ঘটে গেছে। সর্বোচ্চ তো বলেন, ৪০ বছর আগে তৎকালীন মার্কিন সরকারও বলে বেড়াত, আর ছয় মাস পরেই ইরানের ইসলামি সরকারের পতন হতে যাচ্ছে। ছয় মাস পর বলত, আর এক বছর পর এ ঘটনা ঘটবে। কিন্তু বাস্তবে তা ঘটেনি। তখন ইরানের যে ইসলামি সরকার ছিল একটি ছোট্ট চারাগাছ যা আজ বিশাল বটবৃক্ষে পরিণত হয়েছে।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা বলেন, স্বীকার করছি ইরান বর্তমানে অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন। আমাদের মধ্যে অপচয় করার সংস্কৃতি রয়েছে। কিন্তু আশার কথা হচ্ছে, আমরা অচলাবস্থার সম্মুখীন হইনি। প্রতিটি সংকটেরই সমাধান রয়েছে এবং সমাধান হবে। কিন্তু আমেরিকার সামনে নতজানু হওয়া সমস্যার সমাধান নয়। প্রকৃতপক্ষে সেটিই হচ্ছে অচলাবস্থা।
আয়াতুল্লাহিল উজমা খামেনেীয় আরো বলেন, খনিজ সম্পদ, মানব সম্পদ ও ভৌগোলিক অবস্থানসহ প্রাকৃতিক সম্পদ ও সম্ভাবনার দিক থেকে ইরানের অবস্থান বিশ্বের প্রথম সারির কয়েকটি দেশের মধ্যে। কাজেই এসব সম্ভাবনাকে ভালোভাবে কাজে লাগাতে হবে