বাইরের দেশ থেকে সংক্রমণের দিক থেকে বৃটেনে যে পরিমাণ মানুষ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন তার মধ্যে অর্ধেকের উৎস হলো পাকিস্তান। উচ্চ ঝুঁকিতে থাকা দেশগুলো থেকে যাওয়া মানুষের ক্ষেত্রে কঠোর কোয়ারেন্টিনের নিয়ম থাকা সত্ত্বেও এমন ঘটনা ঘটেছে। ১লা মার্চ থেকে বৃটেনে ১৯০টি ফ্লাইট গেছে পাকিস্তানের। তাতে বহন করে নেয়া হয়েছে কমপক্ষে ৬৫ হাজার মানুষকে। এসব মানুষের বেশির ভাগের রয়েছে বৃটিশ পাসপোর্ট। পাকিস্তানে দিনে চার হাজার পর্যন্ত মানুষ আক্রান্ত হওয়ার রিপোর্ট করা হয়েছে। লকডাউন সেখানে শিথিল করার পর থেকে আক্রান্তের সংখ্যা নতুন করে বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন ডেইলি মেইল।
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ডের ডাটা অনুযায়ী বহিরাগতের মাধ্যমে যে পরিমাণ মানুষ সংক্রমিত হয়েছেন তা এসেছে পাকিস্তান থেকে। ৪টা জুন থেকে এমন ৩০টি ঘটনা পাওয়া গেছে। অনেক মানুষ বৃটেনে পৌঁছার পর সরাসরি হাসপাতালে গেছেন এবং কাউকে কাউকে আইসিইউতে নেয়া হয়েছে। প্রতিদিন পাকিস্তান থেকে বৃটেনে দুটি ফ্লাইট গিয়েছে।
২২ শে জুন হংকংয়ের একটি ফ্লাইটের ৩০ জন যাত্রীর করোনা পজেটিভ ধরা পড়ার পর দুবাইয়ের এমিরেটস পাকিস্তানে ফ্লাইট স্থগিত করেছে। এপ্রিলের শুরু থেকে সরাসরি বৃটেনে এবং বৃটেন থেকে বিমান উড্ডয়ন করেছে পাকিস্তান ইন্টারন্যাশনাল এয়ারলাইন্স (পিআইএ)। প্রথমে আটকে পড়া বৃটিশ ও পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রত্যাবর্তন করাতে এই ফ্লাইট চালু করা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমানে তা নিয়মিতভিত্তিতে চালু হয়েছে। একজন মুখপাত্র বলেছেন, যাত্রীদের হিট সেন্সর দিয়ে স্ক্রিনিং করা হয়েছে। তাদেরকে মাস্ক পরতে বাধ্য করা হয়েছে। যাদের উচ্চ তাপমাত্রা আছে, তাদেরকে বিমানে আরোহন করতে দেয়া হয় নি।
বৃটেনের দ্য টেলিগ্রাফকে সরকারের এক মুখপাত্র বলেছেন, সীমান্তে স্বাস্থ্য বিষয়ক নতুন পদক্ষেপের বিষয়ে জানানো হয়েছে। এতে সমর্থন দিচ্ছে জনগণ। আমাদেরকে নিরাপদ রাখার জন্য এসব করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, পাকিস্তানে এ পর্যন্ত কমপক্ষে দুই লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন প্রায় ৪ হাজার মানুষ। এ তথ্য জনস হপকিনস ইউনিভার্সিটির করোনা রিসোর্স সেন্টারের। দু’সপ্তাহ আগে পাকিস্তানের পরিকল্পনামন্ত্রী আসাদ উমর সতর্ক করেছেন এই বলে যে, জনগণ সামাজিক দূরত্বের নিয়মের প্রতি অবজ্ঞা করছে। এ কারণে জুলাইয়ের শেষ নাগাদ পাকিস্তানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১০ লাখে দাঁড়াতে পারে। উল্লেখ্য, পাকিস্তানে বসবাস করেন ২১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মানুষ। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, জুনের শেষ নাগাদ সেখানে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দ্বিগুন হয়ে তিন লাখে দাঁড়াতে পারে। এক মাস পরে এ সংখ্যা দাঁড়াতে পারে ১২ লাখে। দেশজুড়ে হাসপাতালগুলো বলছে, তারা তাদের সক্ষমতার শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে অথবা প্রায় শেষ পর্যায়ের কাছাকাছি। অনেকে করোনা ভাইরাস আক্রান্ত রোগীদের ফিরিয়ে দিচ্ছে।