জেমস অ্যান্ডারসনকে শাস্তির মুখে ফেলতে না পারাটা নিজেদের পরাভব হিসেবেই দেখছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। আইসিসির আচরণবিধিতে ‘সমস্যা’ থাকার কারণেই নাকি অ্যান্ডারসন শাস্তি পাননি বলে অভিমত তাদের। আর সে কারণে ভবিষ্যতে এই আচরণবিধিতে পরিবর্তন আনার বিষয়টি খুব গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছে বিশ্ব ক্রিকেটের মহাপরাক্রমী এই ক্রিকেট বোর্ড।
বিসিসিআইয়ের সেক্রেটারি সঞ্জয় প্যাটেল জানিয়েছেন, জুডিশিয়াল কমিশনারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিসিসিআই আপিল করতে না পারার বিষয়টি আচরণবিধির একটি সমস্যা। বর্তমান বিধিতে কেবল আইসিসিই এই জুডিশিয়াল কমিশনারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করতে পারে।
সঞ্জয় নাকি ইতিমধ্যেই বোর্ড কর্মকর্তা ও বোর্ডের আইনজীবীদের সঙ্গে আলাপ করে আচরণবিধির সেই ‘সমস্যা’ সমাধানে প্রয়োজনীয় সংশোধনী আনার কথা বলেছেন। সংশোধনী এনে আইসিসির পরবর্তী কোনো সভায় তা পাস করিয়ে নেওয়াই এই মুহূর্তে লক্ষ্য বিসিসিআইয়ের।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতের চলমান টেস্ট সিরিজের আলোচিত ঘটনা এই জেমস অ্যান্ডারসন ইস্যু। ট্রেন্টব্রিজ টেস্টে অ্যান্ডারসন ভারতীয় অলরাউন্ডার রবীন্দ্র জাদেজার প্রতি অবমাননাকর আচরণ করেছিলেন বলে অভিযোগ ভারতের। এ ব্যাপারে ম্যাচ রেফারি ডেভিড বুন উল্টো জাদেজাকে জরিমানা করলে বেজায় ক্ষুব্ধ হয় ভারত। বুনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ভারত আপিল করলে পুরো ঘটনা গড়ায় জুডিশিয়াল কমিশনারের টেবিলে। কমিশনার গর্ডন লুইস জাদেজাকে অভিযোগ ও জরিমানার হাত থেকে নিষ্কৃতি দেন। অ্যান্ডারসনকেও কোনো শাস্তি দেননি।
কিন্তু এটিকে এক ধরনের পরাজয় হিসেবেই দেখছে ভারত। তার ওপর ওল্ড ট্র্যাফোর্ড টেস্টে নাকানিচুবানি খাওয়ার পর অহংয়ে ক্ষত থেকে আরও বেশি রক্তক্ষরণই যেন হচ্ছে। সে কারণে বিষয়টি নিয়ে এখনো উত্তপ্ত ভারতীয় ক্রিকেট ও গণমাধ্যমগুলো। বিসিসিআই কোনো রাখঢাক না রেখেই জুডিশিয়াল কমিশনারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে নিজেদের হতাশা আর ক্ষুব্ধতা প্রকাশ করেছে।
বিসিসিআই অ্যান্ডারসনকে শাস্তি দেওয়ার বিষয়ে এতটাই মরিয়া যে, তারা আইসিসিকে জুডিশিয়াল কমিশনারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করারও অনুরোধ জানিয়েছিল। কিন্তু আইসিসির প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন বিসিসিআইয়ের এই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেন। ভারত এখন চাইছে, আচরণবিধিটাই তাই পরিবর্তন করা হোক।
এদিকে বিসিসিআইয়ের সদস্য ক্রিকেট সংস্থাগুলো রীতিমতো ক্ষুব্ধ এন শ্রীনিবাসনের ওপর। শ্রীনিবাসন আইসিসির চেয়ারম্যান হওয়ার পরও জাদেজা-কাণ্ডে কেন হার মানতে হলো, সেটাই মাথায় ঢুকছে না অনেকের। বিহারের ক্রিকেট সংস্থার প্রধান আদিত্য ভার্মা তো এমনও বলেছেন, শ্রীনিবাসন কেন এই ক্ষেত্রে ‘মুখচোরা’ ভূমিকা নিয়েছেন, সেটা তাঁর বোধগম্য নয়। শ্রীনিবাসনকে ‘পাপেট’ও বলেছেন ভার্মা! সূত্র: খালিজ টাইমস, উইজডেন ইন্ডিয়া।