এশিয়ান গেমসে পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে এসে ভালোই বিড়ম্বনার মধ্যে পড়েছেন উত্তর কোরীয় সাংবাদিকেরা। তথ্যপ্রযুক্তির এই যুগে তাঁদের ফিরে যেতে হয়েছে সেই ফ্যাক্স-জামানায়। কারণ আর কিছুই নয়। উত্তর কোরীয় ইন্টারনেট-মাধ্যমের ওপর দক্ষিণ কোরিয়ার নিষেধাজ্ঞা।
দুই কোরিয়ার রাজনৈতিক সম্পর্কের ব্যাপারটি তো সর্বজনবিদিত। ভাষা-সংস্কৃতি এমনকি জাতিগতভাবে এক হলেও রাজনৈতিক কারণে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যাওয়া কোরিয়ার মধ্যে আছে সীমাহীন সন্দেহ আর অবিশ্বাস। কোরিয়ার উভয় অংশই ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে একে অন্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে রেখেছে। দক্ষিণ কোরিয়ায় উত্তর কোরিয়ার কোনো ওয়েবসাইট দেখা যায় না, এমনকি ই-মেইল ব্যবহারের ওপরও আছে বিধি-নিষেধ। তাই ফিরে যাওয়া পুরোনো আমলের ফ্যাক্স-যন্ত্রেই।
গতকাল এশিয়ান গেমসের ফুটবল প্রতিযোগিতার শুরুর দিনই দারুণ এক জয় পেয়েছে উত্তর কোরিয়া। চীনকে ৩-০ গোলে হারিয়ে এবারের এশিয়াড ফুটবলে নিজেদের সম্ভাবনার কথা বেশ ভালোভাবেই জানান দিয়েছে তারা।
এই আনন্দের সংবাদটি দেশে পাঠাতে গিয়ে উত্তর কোরীয় সাংবাদিকেরা পদে পদে হয়েছেন বাধার শিকার। শেষে এশিয়াড আয়োজক কমিটির মিডিয়া উইং তাদের জন্য ফ্যাক্স-যন্ত্রের সংস্থান করে পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে।
এ ব্যাপারে দক্ষিণ কোরিয়ার ‘দুই কোরিয়া একীভূতকরণ’-সংক্রান্ত মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, ‘এটা তো নতুন কিছু নয়। দুই কোরিয়ার মধ্যে ইন্টারনেট যোগাযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন। তাই গেমসে ইন্টারনেট-সংক্রান্ত বিষয়ে অন্য দেশের সাংবাদিকেরা যে সুযোগ-সুবিধা পাবেন, সেটা উত্তর কোরীয় সাংবাদিকেরা ভোগ করতে পারবেন না। তাঁদের জন্য থাকবে ফ্যাক্স-যন্ত্র।’
মুখপাত্র এ ব্যাপারে উত্তর কোরিয়ার মাটিতে দক্ষিণ কোরীয় প্রতিনিধিদলের অভিজ্ঞতাও বর্ণনা করেছেন, ‘উত্তর কোরিয়া সফরে গেলে আমাদেরও এসব বিষয়ে অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। আমরাও সেখানে ফ্যাক্স ব্যবহার করি।’
রেষারেষিতে উত্তর কোরীয়রাও কম যায় না। চীনের বিপক্ষে দারুণ জয়ের পর সে দেশের শীর্ষ দৈনিক সিনমুন যে চার পৃষ্ঠাব্যাপী বন্দনা-সংবাদ প্রকাশ করেছে, সেখানে এশিয়ান গেমস প্রতিযোগিতার কথা উল্লেখ থাকলেও একটি বারের জন্যও বলা হয়নি এশিয়ান গেমস কোথায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে। উত্তর কোরিয়ার পত্রপত্রিকা ও ইলেকট্রনিক মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার নাম উচ্চারণ করাও নাকি নিষিদ্ধ। সূত্র: এএফপি।