প্রতিবেশী শিশু-কিশোররা যখন স্কুলে যায় জানালার পাশে বসে অঝোর নয়নে চোখ দিয়ে পানি গড়িয়ে পড়ে সীমা খাতুনের (১৪)।
তারও ইচ্ছে হয় স্কুলে যেতে, পড়াশোনা করতে। বান্ধবীদের সঙ্গে হই-হুল্লোড়ে মেতে উঠতে। কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে বিছানা তার সঙ্গী হয়ে উঠেছে। বন্ধ হয়ে গেছে স্কুলে যাওয়া।
পাবনার চাটমোহর উপজেলার বালুদিয়ার গ্রামের জাদু প্রামানিক ও রাজিয়া খাতুন দম্পতির ছোট মেয়ে সীমা। জগতলা সিদ্দিকিয়া দাখিল মাদ্রাসায় ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া মেধাবী এই ছাত্রীর বাম পায়ে অস্থি প্রদাহ এবং পরবর্তীতে অস্থিসন্ধির জড়তার কারণে এখন সে পঙ্গু হওয়ার পথে। তার বাম পা সোজা হয়ে গেছে। স্বাভাবিকভাবে সে চলাফেরা করতে পারে না।
সারাদিন বিছানায় শুয়ে বসে কাটে তার। ঘরের বাইরে বের হতে গেলে বাবা অথবা মা’র কোলে চড়ে বের হতে হয়। তবে আবারও সুস্থ হয়ে স্কুলে যেতে চায় সীমা।
দিনমজুর বাবা সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন মেয়েকে সারিয়ে তুলতে। বড় মেয়ের বিয়ের জন্য গচ্ছিত ৮০ হাজার টাকা খরচ করে দীর্ঘ দুই মাস ঢাকার জাতীয় অর্থোপেডিক হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসা করিয়েছেন।
পরে অর্থের অভাবে বাড়ি ফিরে এসে এলাকার কিছু মানুষের কাছ থেকে সুদে ও কয়েকটি এনজিও প্রতিষ্ঠান থেকে ঋণ নিয়ে অপারেশন করিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে।
অপারেশনের ছয় মাস অতিবাহিত হলেও এখন পর্যন্ত সীমার পায়ের কোনো উন্নতি নেই। চিকিৎসক বলেছেন প্রতিদিন ফিজিও থেরাপি দিতে। কিছুদিন পাবনা গিয়ে ফিজিও থেরাপি দেয়ার পর এখন অর্থের অভাবে সেটাও বন্ধ হয়ে গেছে।